করলেই বাঁচা যায়।” ডাক্তারের আসিবার কথার উত্তরে আর কোন কথাই বলিলেন না, আমার সেটা নিতান্ত অভদ্রতা বলিয়া মনে হইল; দিদির উপর মনে মনে একটু রাগ হইল, কেন তিনি কি বলিতে পারিতেন না—‘মাঝে মাঝে খোঁজখবর লইয়া যাইবেন’ অথবা ‘কখনো কোন দিন সুবিধা মত দেখা করিতে আসিলে সুখী হইব’—এমনিতর কোন একটা ভদ্রতার কথা? কিন্তু রাগটা মনেই চাপিয়া লইলাম। দিদির কথার উত্তবে ডাক্তার বলিলেন “আশাকরি এখন ভালই থাকবেন।” বলিয়া বিদায় গ্রহণ করিলেন। যাইবার সময় গৃহকোণে যে ছোট টিপাইটির উপর একটি ফুলদানিতে কতকগুলি সুগন্ধী ফুল সাজান ছিল, সেই টিপাইটি আমার কাছে আনিয়া রাখিয়া বলিলেন—“ফুলের গন্ধ Nervous system এর পক্ষে খুব উপকারী”—বলিয়া আর একবার good bye বলিয়া চলিয়া গেলেন। আমার সহসা বাল্যকালের সেই আটচালা ঘর মনে পড়িল—ছোটুকে আমি যে ফুলগুলি দিতাম সে সযত্নে একটি ভাঙ্গ গ্লাসে পড়ার টেবিলের উপর কেমন সাজাইয়া রাখিত, আমি মাঝে মাঝে তাহার উপর ঝুঁকিয়া ফুলগুলির গন্ধ লইতাম; সুঁকিয়া বলিতাম “বাঃ কেমন গন্ধ, আমি বাড়ীতে যে ফুল সাজাই তার ত কই এমন গন্ধ হয় না”; ছোটু হাসিয়া সগর্ব্বে মাথা নাড়িত। সে ঘটনার সঙ্গে আজিকার এ ঘটনার বিশেষ যে কিছু সাদৃশ্য ছিল এমন নহে; তথাপি আমার মনে হইল—এ যেন ছোটু আমাকে তাহার সেই ফুলদানী আনিয়া দিল। আমি আত্মবিস্মৃত হইয়া জিজ্ঞাসা করিতে গেলাম—“আপনি কি ছোটু?” সহসা আত্মস্থ সচেতন হইলাম; যেন নিদ্রাভঙ্গে জাগিয়া উঠিলাম,
পাতা:কাহাকে?.djvu/৫১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ।
৪৭