ছিলাম; তাহার পর কলিকাতা আসিয়া লোরেটোতে ভর্ত্তি হওয়া অবধি এ পর্যন্ত বাঙ্গ্লা চর্চ্চার মধ্যে প্রধানতঃ কথা কহা, দ্বিতীয়তঃ মাঝে মাঝে ভাল উপন্যাস কবিতা পাইলে যা পড়িয়া থাকি; তাহার সংখ্যাও ত নখাগ্রে গণনা করা যায়। কিন্তু তথাপি আমি যদি এ চিঠি বাঙ্গ্লাতে লিখিতাম তাহা হইলে কি কর্তৃ কর্ম্ম ভাববাচোর সুপ্রয়োগ নিরূপণে, বিশেষণ প্রতিশব্দ নিচয়ের সূক্ষ্ম ভাবার্থভেদ বিচারে,—সমাপক অসমাপক ক্রিয়ার স্থিতি গতির বৈচিত্র্য নির্দ্ধারণে অথবা সামান্য একটা অব্যয় শব্দের যথা-সন্নিবেশ চিন্তায় মস্তিষ্ক এতদূর আলোড়িত বিলোড়িত করিতাম! এককথায় চিঠি লেখার উদ্দেশ্য ভুলিয়া স্বরচনার উদ্দেশ্যে এতটা বিব্রত হইয়া পড়িতাম—অথবা শব্দ, ভাষার প্রতি লক্ষ্য না করিয়া যাহা বলিবার আছে বিনাড়ম্বরে সহজভাবে সেইটুকু বলিয়া লইয়া চিঠিখনি ডাকে ফেলিয়া দিয়াই যথেষ্ট সন্তোষলাভ করিতাম? বাঙ্গালী হইয়া বাঙ্গলা ভুল করিলে তাহাতে আমাদের লজ্জা করে না!—কিন্তু ইংরাজির একটা সামান্য ভুলে আমরা লজ্জায় মরিয়া যাই। বিপদে পড়িলেই মধুসূদনকে মনে পড়ে; সেই দিন আমার জ্ঞান জন্মিল, এই ইংরাজি পত্রখানির জন্য যতটা পরিশ্রম করিলান, তাহ নিতান্তই বৃথা হইল; কিন্তু বাঙ্গলা লিখিবার জন্য এতটা পরিশ্রম করিলে আমি বঙ্গদেশের মধ্যে একজন সুলেখক হইতে পারিতাম নাকি? সেই জ্ঞানের ফল আজ পাঠককে উপহার দিতেছি, তিনি ইহার মীমাংসা করিবেন।
কিন্তু তাহাও বলি—নিতান্তই কি ভাষারি দোষ! মনের দোষ কি ইহাতে কিছুই ছিল না? লোকের যখন বিশেষ কোন