যেরূপ সহজভাবে সব খুলিয়া বলিতে পারিতাম এখন তাহা অসম্ভব হইয়া উঠিল। এরূপ অবস্থায় কি শত ইচ্ছাতেও কথা ফোটে!
কিছু পরে তিনি নিজেই জিজ্ঞাসা করিলেন “আমার চিঠি পেয়েছিলেন আশা করি?” সম্বোধনের পরিবর্ত্তন লক্ষ্য করিলাম, তাঁহার এই অনাত্মীয় ভাব, অনুত্তপ্ত শীতল কঠিন ভাষা, আমার হৃদয়কে কেমন তুষার জমাট করিয়া আনিতে লাগিল; আমিও অস্বাভাবিক রুদ্ধ গম্ভীর স্বরে বলিলাম—“পেয়েছি, শীঘ্র আসবেন বলে উত্তর দিই নি।”
“উত্তর কি এখন প্রত্যাশা করতে পারি?”
অবশ্যই পারেন। আমিও ত বলিবার জন্য প্রস্তুত, কিরূপে সমস্ত খুলিয়া বলিব এতদিন ধরিয়া অনবরত মনে মনে তাহার রিহার্সেল দিয়া আসিতেছি অথচ এখন বলিতে গিয়া দেখিলাম বলা কত কঠিন! কি যে বলিব—কি কথা হইতে আরম্ভ করিব, কিছুই মনে করিতে পারিলাম না, মাথার মধ্যে কথার রাশি এলোমেলো ভাবে সবেগে ঘুরপাক খাইতে লাগিল। ঘূর্ণ মস্তিষ্ক, রূদ্ধাবেগ লইয়া আমি বলিলাম—“আমি-আমি কি বলব—আপনার দোষ”
তিনি বলিলেন “এখনো সেইভাব—সেই উত্তর-আমারই দোষ!—”
আমি যদিও তাহা বলিতে যাই নাই—বলিতে গিয়াছিলাম, আপনার দোষ নেই—আমারি দোষ ইত্যাদি; কিন্তু কথাটা এইখানেই তিনি ধরিয়া লইয়া উত্তর করিলেন। উল্লিখিত কথার পর বলিলেন “দোষ অমারি তবে হ’ক, কিন্তু এ দোষ