এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম পরিচ্ছেদ।

মানুষের কোন সম্পর্কই থাকে না। এখানে তাই কেবল নিতান্তই অঙ্কের সঙ্কেতে অর্থাৎ সালের খাতিরে সালটা মনে রাখিতে গিয়াই যত মুস্কিল বাধিয়াছে; তাহা ১২৮২ বা ৮৩ ক্রমাগতই ভুল হইয়া যায়। কিন্তু ভাবিয়া দেখিলে এ ভুলে ক্ষতি কাহার? আমারো নহে পাঠকেরো নহে। অবশ্য এ রকম একটা ভুলে জীবনে যদি সুদীর্ঘ তিনশত পঁয়ষট্টি দিন ও বারটা মাসওয়ালা একটা বৃহৎ সম্বৎসরের ব্যবধান পড়িত তাহা হইলে ক্ষুদ্রজীব একজন মনুষ্যের পক্ষে তাহাতে বিস্তর তফাৎ করিয়া তুলিত, কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে বা দুর্ভাগ্যক্রমে আমি হাজার ভুলি না কেন, কাল আমাকে কিছুতেই ভুলিবে না, বয়স আমার সর্ব্ব অবস্থাতেই কড়ায় গণ্ডায় ঠিকটি থাকিয়া যাইবে—আর পাঠকের পক্ষে—আমি উনিশ না হইয়া যদি বিশ হই, কিম্বা বিশ না হইয়া যদি একুশই হই—সব সমানই কথা। যতদূর বুঝিতেছি তিনি কেবল বিষয়টার একটা শেষ নিষ্পত্তিতে আসিতে পারিলেই নিশ্চিন্ত হইতে পারেন, নিষ্পত্তিটা ঠিক বা বেঠিক হউক তাহাতে কি এত আসিয়া যায়? এ প্রকৃতি পুরাতত্ববিদেরই একচেটিয়া নহে। তবে ধরিয়া লওয়া যাক, আমার বয়স তখন আঠার উনিশ। আমি এখনো অবিবাহিত।—শুনিয়া কি কেহ আশ্চর্য্য হইতেছেন? কিন্তু আশ্চর্য্য হইবার ইহাতে কি আছে? আজকাল ত এমন অনেকেই ইহার চেয়েও অধিক বয়স পর্য্যন্ত অবিবাহিত থাকেন—আমিও না হয় আছি। ইহাই যদি বিস্ময়জনক হয় তবে অধিকতর বিস্ময়ের কথা পরে আসিতেছে। আমি ভালবাসি, বিবাহের পূর্ব্বেই ভালবাসি; তিনি যে স্বামী হইবেন এমনতর আশা করিয়াও ভালবাসি নাই। কেবল তাহাই নহে,