একাদশ পরিচ্ছেদ।
অন্য সকলে চলিয়া গেলে ভগিনীপতি ডাক্তারকে ডিনারে থাকিতে বলিলেন। সন্ধ্যার পর আমরা গৃহ কর্ম্ম সারিয়া ড্রয়িংরুমে প্রবেশ করিয়া দেখিলাম, তিনি একাকী টেবিলের নিকট বসিয়া আমার সেই পরিত্যক্ত নভেলখানি লইয়া পড়িতেছেন। আমরা একেবারে নিকটে আসিতে তাঁহার যেন হুঁস হইল, বইখানি বন্ধ করিয়া উঠিয়া দাঁড়াইলেন। দিদি বলিলেন, “বসুন। এমন অজ্ঞান হয়ে কি পড়ছিলেন? মিডলমার্চ্চ? আমরা এসে ত আপনার সুখস্বপ্ন ভাঙ্গালুম না?”
আমরা উপবিষ্ট হইলে ডাক্তারও বসিলেন—বসিয়া ঈষৎ উৎগ্রীব হইয়া তাঁহার সুকোমল পাণ্ডুবর্ণ, বালোপম মসৃণ চিবুক ও কপোল প্রান্তন্থ, কর্ণমূল বিলুষ্ঠিত আকুঞ্চিত বিরল শ্মশ্র গুচ্ছে বামহস্তের অঙ্গুলী সঞ্চালিত করিতে করিতে, সূক্ষ্ম স্বর্ণরজ্জু গ্রথিত আইগ্লাসের মধ্য হইতে আমাদের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করিয়া বলিলেন—“মাপ করবেন, সত্যিই এ একটা আমার ভারী weakness; জর্জ এলিয়টের নভেল একখানি হাতের কাছে পেলে আর লোভ সামলাতে পারি নে। দেখুন না এই বইখানা কতবার পড়েছি—তার ঠিক নেই,—তবুও এখন মনে হচ্ছিল,— যেন নতুন বই পড়ছি, নতুন জ্ঞান নতুন আনন্দের মধ্যে ডুবে আছি। আপনি অবশ্য পড়েছেন বইখানি?”
দিদি। পড়েছিলুম অনেকদিন আগে; মন্দ লাগেনি।