এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮৪
কাহাকে?

 সে দিন আকাশে পূর্ণচাঁদ,—জ্যোৎস্নায় দিগদিগন্ত ভাসিয়া যাইতেছিল—আহারান্তে আমরা তাই ছাতে বসিলাম। দিদি বলিলেন—“ইংলণ্ডে ত আপনার সবই ভাল,—কিন্তু এমন চাঁদের আলো কি পেতেন?

 ডাক্তার। সেটা rare ছিল বটে,—সেই জন্যই বোধ হয়— যখন জ্যোৎস্না ফুটত, বড় যেন বেশী সৌন্দর্য্য ছড়াত।”

 দিদি। আপনি দেখছি—একবারে মজে গেছেন। ইংলণ্ডের সুন্দরীরাই ভাল আমরা জানতুম, আবার চাঁদের আলোও এদেশের চেয়ে বেশী সুন্দর? আপনি যে সেই চাঁদের দেশ থেকে তার অনন্ত আকর্ষণ এড়িয়ে ফিরেছেন—এ একটা পরমাশ্চর্য্য বলে মনে হচ্ছে!

 তিনি তাঁহার কপোল প্রান্তের শ্মশ্রুগুচ্ছে অঙ্গুলি সঞ্চালিত করিয়া একটু হাসিয়া বলিলেন—“জানেন যে সংসারে আশ্চর্য্যই বেশী ঘটে! যেখানে সম্ভাবনা যত প্রবল সেখানে দেখবেন প্রায়ই নৈরাশ্য, আর যেখানে আপনি least সম্ভাবনা আছে ভাবছেন, least প্রত্যাশা করছেন—সেইখানেই দেখবেন তা ঘটছে।”

 বলিতে বলিতে তিনি যেন চকিত নয়নে আমার দিকে চাহিলেন, জ্যোৎস্না বাহিত সেই নীরব দৃষ্টি হইতে কি এক অশ্রুতমধুর রব ধ্বনিত ছুইল, তাহার পুলক কম্পনে হৃদয়ের অন্তঃপুর স্তরে স্তরে কল্পিত আলোড়িত করিয়া সুদীর্ঘ নিশ্বাস উথলিত করিয়া তুলিল।