ধরেছে সুন্দর কান্তি মাণিক্যের অঙ্গদের মতো,
মহৈশ্বর্যে আছে নম্র, মহাদৈন্যে কে হয় নি নত,
সম্পদে কে থাকে ভয়ে, বিপদে কে একান্ত নির্ভীক,
কে পেয়েছে সব চেয়ে, কে দিয়েছে তাহার অধিক,
কে হয়েছে নিজ শিরে রাজভালে মুকুটের সম
সবিনয়ে সগৌরবে ধরা-মাঝে দুঃখ মহত্তম-
কহো মোরে, সর্বদর্শী হে দেবর্ষি, তাঁর পুণ্য নাম।’
নারদ কহিলা ধীরে, ‘অযোধ্যার রঘুপতি রাম।’
‘জানি আমি, জানি তারে, শুনেছি তাঁহার কীর্তিকথা।’
কহিলা বাল্মীকি, ‘তবু, নাহি জানি সমগ্র বারতা,
সকল ঘটনা তাঁর— ইতিবৃত্ত রচিব কেমনে?
পাছে সত্যভ্রষ্ট হই, এই ভয় জাগে মোর মনে।’
নারদ কহিলা হাসি, সেই সত্য যা রচিবে তুমি-
ঘটে যা তা সব সত্য নহে। কবি, তব মনোভূমি
রামের জনমস্থান, অযোধ্যার চেয়ে সত্য জেনো।’
এত বলি দেবদূত মিলাইল দিব্যস্বপ্ন-হেন
সুদূর সপ্তর্ষিলোকে। বাল্মীকি বসিলা ধ্যানাসনে,
তমসা রহিল মৌন, স্তব্ধতা জাগিল তপোবনে।
পাতা:কাহিনী-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/২৮
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
ভাষা ও ছন্দ
২৫