গৃহধর্মচারিণীর পুণ্যদেহ-’পরে
কলুষপরুষ স্পর্শে অসম্মানে করে
হস্তক্ষেপ- পতি-সাথে বাধায়ে বিরোধ
যে নর পত্নীরে হানি লয় তার শোধ,
সে শুধু পাষণ্ড নহে, সে যে কাপুরুষ।
মহারাজ, কী তার বিধান? অকলুষ
কুরুবংশে পাপ যদি জন্ম লাভ করে
সেও সহে, কিন্তু প্রভু, মাতৃগর্বভরে
ভেবেছিনু গর্ভে মোর বীরপুত্রগণ
জন্মিয়াছে- হায় নাথ, সেদিন যখন
অনাথিনী পাঞ্চালীর আর্তকণ্ঠরব
প্রাসাদপাষাণভিত্তি করি দিল দ্রব
লজ্জা-ঘৃণা-করুণার তাপে, ছুটি গিয়া
হেরিনু গবাক্ষে, তার বস্ত্র আকর্ষিয়া
খল খল হাসিতেছে সভা-মাঝখানে
গান্ধারীর পুত্রপিশাচেরা- ধর্ম জানে,
সেদিন চূর্ণিয়া গেল জন্মের মতন
জননীর শেষ গর্ব। কুরুরাজগণ,
পৌরুষ কোথায় গেছে ছাড়িয়া ভারত
তোমরা হে মহারথী, জড়মূর্তিরৎ
বসিয়া রহিলে সেথা চাহি মুখে মুখে,
কেহ বা হাসিলে, কেহ করিলে কৌতুকে
কানাকানি- কোষ-মাঝে নিশ্চল কৃপাণ
বজ্রনিঃশেষিত লুপ্ত বিদ্যুৎ-সমান
পাতা:কাহিনী-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৪৬
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
গান্ধারীর আবেদন
৪৩