পাতা:কিশোর (দ্বিতীয় সংস্করণ) - জলধর সেন.pdf/৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কিশোর বলিলাম। একটা অন্যায় কাজ করিয়াছি, আবার মায়ের কাছে মিথ্যা কথা বলিয়া তাহার পাপের ভার বুদ্ধি করিতে পারিলাম না । মা আমাকে তঁহার কোলের কাছে টানিয়া লইয়া স্নেহদ্র স্বরে বলিলেন, “ওদের সঙ্গে আর মিশিস নে বাবা ! তুই ষে বিধবার সন্তান ; তোর মুখ পানে চেয়েই এত কষ্ট সহ্য করেছি। তুই যদি কু-সংসর্গে মিশে ব’য়ে যাস, তা হ’লে যে আমার আর দাড়াবার স্থান থাকবে না। বাবা ”-এই বলিয়া মা আমার মাথায় হাত বুলাইতে লাগিলেন। আমার মনে হইল, আমার সমস্ত পাপ মাতৃহস্তের স্নেহস্পর্শে যেন মুছিয়া যাইতে লাগিল। মনে এতই কষ্ট হুইল যে, আমি কাদিয়া ফেলিলাম। আমার চোখের জলে মায়ের অঞ্চল ভিজিয়া গেল । এমন কথা না বলিয়া মা আমাকে মারিলেন না কেন ? মনে হইল দশ ঘা প্ৰহারে ইহা অপেক্ষা আমার লঘুদণ্ড হইত। সেই আমার প্রথম চুরির চেষ্টা, আর সেই আমার প্রথম শাস্তি ; ইহা অপেক্ষা গুরুতর শান্তি আমি জীবনে কখনও ভোগ করি নাই । তাহার পর আমি কখন কোন অন্যায় কাজ করি নাই। মা কতদিন স্বগে গিয়াছেন, কিন্তু যখনই সম্মুখে কোনও প্রলোভন আসিয়াছে, তখনই কি জানি কেমন করিয়া মায়ের করুণ কণ্ঠের বেদনাভরা কথাটি মনে হইয়াছে, “তুই যে বিধবার সন্তান!” VN