পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩০
কুরু পাণ্ডব
[৮

হতমিত্র হইয়া ছিন্নপক্ষ পক্ষীর ন্যায় অনাথ হইবেন, তজ্জন্যই আমি শােকাকুল হইতেছি।

 তখন ধৃতরাষ্ট্র পুনরায় অনুনয় বাক্যে কহিলেন—

 বৎস! বাসুদেবের কল্যাণকর বাক্য গ্রহণ কর, তাতে তােমার ঐশ্বর্য্য অক্ষুণ্ণ থাকিবে। যে রাজ্যার্দ্ধ তুমি দান করিবে, মহামতি কেশবের সাহায্যে তদপেক্ষা অধিক পরিমাণে রাজ্যবৃদ্ধি করিতে পারিবে। কিন্তু ইহাকে প্রত্যাখ্যান করিলে পরাজয় অনিবার্য্য, তাহার সন্দেহ কি?

 রাজা দুর্য্যোধন আর কাহারও কথায় কিছুমাত্র মনােযােগ না করিয়া কৃষ্ণকে উষ্ণভাবে প্রত্যুত্তর প্রদান করিলেন―

 হে বাসুদেব! আমরা ক্ষত্রধর্ম্মাবলম্বী, শত্রুর নিকট নত হওয়া অপেক্ষা আমরা সমরক্ষেত্রে বীরশয্যা শ্রেয়স্কর জ্ঞান করি। আমি অপ্রাপ্তবয়স্ক থাকিতে পিতা আমার অনভিমতে পাণ্ডবদিগকে আমার রাজ্যের অংশ প্রদান করিয়াছিলেন। আমি জীবিত থাকিতে তাহা পুনরায় প্রত্যর্পিত হইবে না। অধিক কি, সূচির অগ্রভাগে যে পরিমাণ ভূমি বিদ্ধ হতে পারে, তাহাও পাণ্ডবদিগকে প্রদান করিব না।

 দুর্য্যোধনের উগ্রবাক্যে রুষ্ট হইয়া কৃষ্ণ উপহাস-সহকারে প্রত্যুত্তর করিলেন—

 হে দুর্য্যোধন! তুমি যে বীর-শয্যালাভের বাসনা করিতেছ, তাহা যথাকালে অবশ্যই প্রাপ্ত হইবে। তুমি পিতা মাতা ও সমগ্র গুরুজনের বাক্য অবহেলা করিতেছ, অথচ