পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০]
কুরু পাণ্ডব
১৬৫

সহসা উপস্থিত হইল। এই প্রিয়দর্শন বালক মাতৃগৃহে প্রতিপালিত ও শিক্ষিত হইয়াছিল, এক্ষণে যুদ্ধসংবাদ প্রাপ্ত হইয়া বহুসংখ্যক নাগসৈন্য পরিবৃত হইয়া যুদ্ধক্ষেত্রে উপস্থিত হইল এবং কৌরবসেনা বিনষ্ট করিতে করিতে অগ্রসর হইয়া শকুনি অধিকৃত সৌবল-সৈন্যদলের উপর নিপতিত হইল। গান্ধারগণ ইরাবানকে চতুর্দ্দিক্ হইতে পরিবৃত করিয়া নানা স্থানে সুতীক্ষ্ণ অস্ত্রে বিদ্ধ করিয়া তাহার অঙ্গ ক্ষতবিক্ষত করিল, কিন্তু ইরাবান্ তাহাতে ব্যথিত না হইয়া বরং অধিক ক্রোধাবিষ্টচিত্তে দুর্য্যোধন-প্রেরিত শকুনির রক্ষকগণের আগমন সত্বেও গান্ধারবীরগণকে ক্রমাগত বিনাশ করিতে লাগিল। একমাত্র শকুনি বারম্বার পরিরক্ষিত হইয়া পরিত্রাণ লাভ করিলেন।

 তখন দুর্য্যোধন অতিশয় ক্রোধাবিষ্ট হইয়া ভীমকর্ত্তৃক নিহত বক-নামক রাক্ষসের অনুচর আর্য্যশৃঙ্গকে ইরাবানের সংহারার্থে প্রেরণ করিলেন। সেই নিশাচর তথায় উপস্থিত হইলে, ইরাবান্ খড়্গদ্বারা তাহার কার্ম্মুক বিনষ্ট করিয়া তাহাকে বিশেষরূপে আহত করিল। রাক্ষস তখন মায়াযুদ্ধ অবলম্বন করিয়া আকাশমার্গে উত্থিত হইল কিন্তু তথায়ও ইরাবান্ তাহাকে শরনিকরে একান্ত ব্যথিত করিলে আর্য্যশৃঙ্গ অতি ঘোররূপ পরিগ্রহ করিয়া বালক ইরাবানকে বিমোহিত করিল এবং সেই অবসর প্রাপ্ত হইয়া সুতীক্ষ্ণ অসিদ্বারা তাহার কিরীট-শোভিত সুন্দর বদনমণ্ডল ভূতলে নিপাতিত করিল।