পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কুরু পাণ্ডব

তুলিল। পাছে ইহাতে উত্তেজনাবশে যোদ্ধাদের ক্রোধের উদ্রেক হয়, সেই নিমিত্ত ধীমান্ দ্রোণ দুই বীরকে নিবারণ করিবার জন্য অশ্বত্থামাকে যুদ্ধস্থলে প্রেরণ করলেন। অশ্বত্থামার চেষ্টায় ভীম ও দুর্য্যোধন নিরস্ত হইলেন।

 অনন্তর দ্রোণ বাদ্যধ্বনি নিবারণপূর্ব্বক রঙ্গপ্রাঙ্গণে দণ্ডায়মান হইয়া কহিলেন—

 হে দর্শকগণ! আমার শিষ্যদের বিদ্যা ও কৌশল তোমাদের নিকট প্রদর্শিত হইল। ইহাদের মধ্যে আমি অর্জ্জুনকেই সর্ব্বশ্রেষ্ট জ্ঞান করি, অতএব তোমরা বিশেষরূপে তাঁহাকে দর্শন কর।

 তখন অর্জ্জুন আচার্য্যের আদেশক্রমে গোসর্প-চর্ম্মের অঙ্গুলি ত্রাণ ও কাঞ্চনময় কবচ পরিধানপূর্ব্বক ধনুর্ব্বাণ লইয়া রঙ্গস্থলে একাকী অবতীর্ণ হইবামাত্র তুমুল শঙ্খধ্বনি ও বাদ্যোদ্যম হইল।

 ইনি শ্রীমান কুন্তীনন্দন!—ইনি তৃতীয় পাণ্ডব!—ইনি দেবরাজ ইন্দ্রদত্ত পুত্র!-ইনি শ্রেষ্ঠ অস্ত্রবেত্তা!-ইনি কৌরবদের রক্ষক হইবেন!—প্রভৃতি প্রশংসাধ্বনি চতুর্দ্দিক হইতে উত্থিত হইতে লাগিল। পুত্রের সুযশ ঘোষণায় কুন্তী অশেষ প্রতি লাভ করিলেন।

 এই সকল মহৎকার্য্য সমাপনান্তে সভা যখন ভগ্নপ্রায়, বাদ্যকোলাহল নিস্তব্ধ এবং দর্শকবৃন্দ নির্গমনোম্মুখ, সেই সময়ে রঙ্গভূমির দ্বারদেশে সহসা কিঞ্চিৎ চঞ্চলতা অনুভূত হইল এবং কোন বীরপুরুষের বাহ্বাস্ফোটন-শব্দ শুনা গেল