পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৯২
কুরু পাণ্ডব
[১১

আরম্ভ করিলে অর্জ্জুন দ্বিগুণীকৃত তেজে অস্ত্রবর্ষণ করিয়া এককালে সম্মুখস্থিত সমগ্র বীরগণকে যমালয়ে প্রেরণ করিলেন। পরে অবশিষ্ট ত্রিগর্ত্তগণকে শরনিকরে অতিশয় পীড়ন করিতে লাগিলেন।

 অবশেষে সমস্ত ত্রিগর্ত্তগণ জীবিতাশা পরিত্যাগপূর্ব্বক একসঙ্গে বাণ বর্ষণ আরম্ভ করিলে অর্জ্জুন ও কৃষ্ণ তাহাতে একান্ত আচ্ছন্ন হইয়া আর পরস্পরেও দৃষ্টিগোচর রহিলেন না। ত্রিগর্ত্তগণ ইহা দেখিয়া উঁহাদিগকে নিহত-বোধে বস্ত্রবিধূননপূর্ব্বক মহা কোলাহল করিতে লাগিল। বাসুদেব ক্ষত-বিক্ষতাঙ্গ ও একান্ত ক্লান্ত হইয়া বলিতে লাগিলেন―

 হে পার্থ! তুমি ত অক্ষত আছ? আমি তোমাকে দেখিতে পাইতেছি না।

 তাঁহার বাক্য শ্রবণে অর্জ্জুন বায়ব্যাস্ত্রে সেই সমস্ত শরজাল অপসৃত করিলেন এবং তৎপরে তাহাদিগকে নিতান্ত ব্যাকুল করিয়া ভল্লাস্ত্রদ্বারা কাহারও মস্তক, কাহারও হস্ত, কাহারও উরুদেশ ছেদন করিতে লাগিলেন। তখন নিঃশেষিতপ্রায় ত্রিগর্ত্ত-সৈন্য অর্জ্জুনের প্রভাব আর সহ্য করিতে না পারিয়া পলায়ন করিল।

 অর্জ্জুনও শত্রুগণকে পরাজিত দেখিয়া সত্বর যুধিষ্ঠিরের নিকট প্রত্যাগত হইবার নিমিত্ত রথচালনা করিলেন এবং উঁহার গতিনিবারণকাৱী সৈন্যদলকে পদ্মবনপ্রবিষ্ট মাতঙ্গের ন্যায় বিমর্দ্দিত করিয়া অতি বেগে ধাবমান হইলেন। অর্জ্জুনের অবারিত গতি দর্শনে প্রাগ্‌জ্যোতিষেশ্বর ভগদত্ত