পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০০
কুরু পাণ্ডব
[১১

অভিমন্যুর উপর শরবর্ষণ করিতে লাগিলেন। অনন্তর সেই রথ-যুদ্ধ-বিশারদ বীরদ্বয় দক্ষিণে ও বামে বিচিত্র মণ্ডলাকারে বিচরণপূর্ব্বক সংগ্রাম আরম্ভ করিলেন। মহাবীর অভিমন্যু কহিলেন―

 অদ্য আমি সৌভাগ্যক্রমে সমরে তােমাকে সম্মুখীন দেখিলাম। আমার পিতৃব্যগণকে যে কটুবাক্যসকল কহিয়াছিলে এক্ষণে আমি তাহার প্রতিশোধ লইব।

 এই বলিয়া দুঃশাসনের বিনাশ নিমিত্ত অর্জ্জুন-নন্দন অগ্নির ন্যায় তেজঃসম্পন্ন ভীষণ বাণ নিক্ষেপ করিলেন। মহাবাহু দুঃশাসন তাহাতে গাঢ় বিদ্ধ হইয়া রথােপরি শয়ান ও মূর্চ্ছিত হলেন। তাঁহার সারথি তাঁহাকে তদবস্থ দেখিয়া রণস্থল হইতে অপসৃত করিল।

 তখন ধার্ত্তরাষ্ট্রগণের পরম হিতকারী মহাধনুর্দ্ধর কর্ণ ক্রোধান্বিতচিত্তে সুতীক্ষ্ণ সায়কদ্বারা অভিমন্যুকে বিদ্ধ করিলেন। কিন্তু অর্জ্জুন-তনয় কিছুমাত্র বিচলিত না হইয়া কর্ণকে বহুসংখ্যক শরে বিদ্ধ করিয়া সম্মুখীন সমগ্র রথিগণকে অতিশয় ব্যথিত করিলেন; ফলত কেহই তাঁহার কোরবসৈন্য-দলন নিবারণ করিতে পারিলেন না। অভিমন্যুবিক্ষিপ্ত বিষম বিশিথসকল রথ ভগ্ন এবং নাগ ও অশ্বসমুদায় নিধন করিতে লাগিল। আয়ুধ অঙ্গুলীত্র ও অঙ্গদ-সমন্বিত হেমাভরণ-ভূষিত ছিন্ন বাহু ও মাল্যকুণ্ডল-সমলঙ্কৃত নরমস্তকসকল ধরাতলে নিপতিত হইতে থাকিল।

 ওদিকে সৈন্যগণ দেখিয়া স্তম্ভিত হইয়া রহিল যে,