পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১]
কুরু পাণ্ডব
২৪৫

পঙ্ক হইতে রথচক্র উদ্ধার করিবার চেষ্টা করিতে লাগিলেন; কিন্তু সেই গাঢ় নিমগ্ন চক্রকে কিছুতেই উত্তােলন করিতে সক্ষম হইলেন না। ইত্যবসরে অর্জ্জুন প্রকৃতিস্থ হইলেই বাসুদেব কহিলেন―

 হে অর্জ্জুন! কর্ণ পুনরায় রথে আরােহণ না করিতেই উহার মস্তক ছেদন কর।

 তখন অর্জ্জুন তূণীর হইতে ইন্দ্রের বজ্রসদৃশ এক বাণ গ্রহণ ও গাণ্ডীবে যােজনা করিলেন। ব্যাদিতাস্য কৃতান্তের ন্যায় সেই ভীষণ অস্ত্র অর্জ্জুনকর্ত্তৃক আকর্ণ আকৃষ্ট ও পরিত্যক্ত হইলে তাহা প্রজ্বলিত উল্কার ন্যায় দিঙ্মণ্ডল উদ্ভাসিত করিয়া কর্ণের মস্তক ছেদনপূর্ব্বক শরৎকালীন নভােমণ্ডল হইতে নিপতিত দিবাকরের ন্যায় তাঁহার দেহ হইতে ভূতলে পাতিত করিল। সূতপুত্রের উন্নত কলেবরও কুলিশ-বিদলিত গৈরিকস্রাবী গিরি-শিখরের ন্যায় ধরাশায়ী হইল।

 তখন বাসুদেব যৎপরােনাস্তি আহ্লাদিত হইয়া অতি গম্ভীরস্বরে শঙ্খধ্বনি করিতে লাগিলেন এবং অন্যান্য পাণ্ডব পক্ষীয় বীরগণ অর্জ্জুনের সমীপে আগমন করিয়া তাঁহাকে সম্বর্ধনাপূর্ব্বক সিংহনাদ এবং অস্ত্রাদি বিধুনন করিতে লাগিলেন।

 এদিকে দুর্য্যোধন শোকসাগরে একান্ত নিমগ্ন হইয়া― হা কর্ণ!―বলিয়া বারম্বার বিলাপ পরিতাপ করিতে করিতে হতাবশিষ্ট ভূপালগণের সহিত অতি কষ্টে স্ব-শিবিরে প্রবেশ করিলেন। কৌরবগণ বিবিধ যুক্তিদ্বারা কুরুরাজকে সান্ত্বনা