পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১]
কুরু পাণ্ডব
২৬৫

করিলেন এবং ভীমসেন ক্রুদ্ধ হইয়া প্রতিপ্রহারার্থে বজ্রতুল্য ভীষণ গদা উদ্যত ও বিঘূর্ণিত করিলে দুর্য্যোধন সেই গদার উপর গদাঘাত করিয়া তাঁহাকে নিবারণ করিলেন। তর্দ্দশনে সকালে বিস্ময়াবিষ্ট হইল।

 ক্রমে মহাবীর কুরুরাজ বিবিধ কৌশল প্রদর্শন করিয়া সমরাঙ্গণে সঞ্চরণ করিতে থাকিলে সকলেই তাঁহাকে সমধিক যুদ্ধনিপুণ বলিয়া বোধ করিলে তাঁহার গদাভ্রমণবেগ অবলোকন করিয়া পাণ্ডবগণের অন্তঃকরণে অতীব ভীতির সঞ্চার হইল।

 অনন্তর বৃকোদরের মস্তকে দুর্য্যোধন এক গদাঘাত করিলে তিনি তাহাতে কিছুমাত্র বিচলিত না হইয়া ক্রোধপ্রজ্বলিতচিত্তে কুরুরাজের প্রতি তাহার গদা নিক্ষেপ করিলেন; কিন্তু রাজা দুর্য্যোধন অনায়াসে সেই নিক্ষিপ্ত গদা নিষ্ফল করিয়া অরক্ষিত ভীমসেনের বক্ষে এক প্রচণ্ড আঘাত করিলেন, তাহাতে তিনি অতিশয় ব্যথিত হইয়া বিমােহিতপ্রায় হইলেন, কিন্তু তাহা সত্বেও তিনি কোন প্রকার ধৈর্য্যচ্যুতি প্রকাশ না করায় দুর্যোধন তাঁহাকে অবিচলিত ও প্রতিপ্রহারোদ্যত জ্ঞান করিয়া দ্বিতীয় আঘাত করিবার ছিদ্র অবলম্বনের সুযােগ সম্বন্ধে বঞ্চিত হইলেন।

 পরে প্রকৃতিস্থ হইয়া নিতান্ত রোষাবিষ্টচিত্তে মহাবল বৃকোদর পুনরায় গদাগ্রহণপূর্ব্বক কুরুরাজের প্রতি ধাবমান হইয়া তাঁহার পার্শ্বদেশে এক আঘাত করিলে দুর্য্যোধনের শরীর ক্ষণকাল অবসন্ন হওয়ায় তাঁহার অবনত জনুদ্বয় ধরা-