পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কুরু পাণ্ডব
৩৫

প্রস্থান করিতে দেখিয়া দ্রুপদ বিষণ্ণ চিত্তে বসিয়াছিলেন। ধৃষ্টদ্যুম্নকে দেখিবামাত্র তিনি সাগ্রহে প্রশ্ন আরম্ভ করিলেন—

 হে পুত্র! কৃষ্ণা কাহার সহিত কোথায় গমন করিলেন? কুসুমমালা শ্মশানে পতিত হয় নাই ত?

 ধৃষ্টদ্যুম্ন আশ্বাস প্রদান পূর্ব্বক কহিলেন―

 হে পিতঃ! পরিতাপের কোনই কারণ দেখিলাম না। আমি ইঁহাদের পদানুসরণ করিয়া যে সকল আচারব্যবহার ও কথােপকথনের ভঙ্গি দেখিতে লাগিলাম, তাহাতে ইঁহাদিগকে ক্ষত্রকুলজাত বলিয়া অনুমান হইতেছে। কিয়দ্দিবসাবধি জনশ্রুতি শুনা যাইতেছে যে, পাণ্ডবগণ গৃহদাহ হইতে উদ্ধার পাইয়া প্রচ্ছন্নবেশে ভ্রমণ করিতেছেন। নিশ্চয় ইঁহারা সেই পঞ্চভ্রাতা, আমাদেরই ভাগ্যবলে কৃষ্ণাকে জয় করিয়াছেন। অর্জ্জুন ব্যতীত কর্ণের তেজ কে সহ্য করিতে সমর্থ? পাণ্ডব ব্যতীত কাহারা দুর্যোধনপ্রমুখ নরেন্দ্রশ্রেষ্ঠগণের দীপ্তি আচ্ছাদন করিয়া রাখিতে পারে?

 দ্রুপদ তখন পরিতুষ্ট মনে পুরােহিতকে আহ্বানপূর্ব্বক কুম্ভকারের কুটীরে প্রেরণ করিয়া তাঁহাকে লক্ষ্যভেদকারীর কুলশীল জিজ্ঞাসা করিয়া আসিতে বলিলেন।

 পুরােহিত পাণ্ডবসমীপে উপনীত হইয়া বাগাড়ম্বরপূর্ব্বক তাঁহাদের ভূরি ভূরি প্রশংসা করিয়া কৌশলে বলিতে লাগিলেন―

 মহাত্মা পাণ্ডু দ্রুপদরাজের প্রিয়সখা ছিলেন, অতএব