পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৬
কুরু পাণ্ডব

 রাজা যুধিষ্ঠির দ্যূতক্রীড়াপ্রিয়, কিন্তু তাহাতে তাঁহার নৈপুণ্য নাই। আমি অক্ষক্রীড়ায় বিশেষরূপ দক্ষ, অদ্যাবধি ইহাতে কেহই আমাকে পরাস্ত করিতে পারে নাই। অতএব যুধিষ্ঠিরকে পাশক্রীড়া নিমিত্ত আহ্বান কর, আহূত হইলে তিনি অনিচ্ছা থাকিলেও লজ্জায় নিবৃত্ত হইতে পারিবেন না, তখন আমি তােমার নিমিত্ত অক্ষকৌশল প্রদর্শনপূর্ব্বক যুধিষ্ঠিরের প্রদীপ্ত রাজলক্ষ্মী জয় করিয়া লইব। কিন্তু এবিষয়ে তােমার পিতাকে পূর্ব্বাহ্ণে সম্মত করা আবশ্যক, তাঁহার অনুজ্ঞা লইয়া যুধিষ্ঠিরকে নিমন্ত্রণ করা যাইবে।

 দুর্য্যোধন কহিলেন—পিতার নিকট আমি এরূপ প্রস্তাব করিতে সাহস করি না, তুমি উপযুক্ত অবসর বুঝিয়া তাঁহাকে সম্মত করাইবে।

 এই যুক্তি অনুসারে রাজধানীতে প্রত্যাগত হইবার পর একদিন শকুনি ধৃতরাষ্ট্রকে বলিতে লাগিলেন―

 মহারাজ! দুর্য্যোধন কৃশ, বিবর্ণ ও সর্ব্বদা চিন্তাপরবশ হইয়া পড়িতেছে। জ্যেষ্ঠপুত্রের শােকের কারণ আপনার পরিজ্ঞাত হওয়া কর্ত্তব্য।

 ধৃতরাষ্ট্র অতিশয় উদ্বিগ্ন হইয়া দুর্য্যোধনকে আহ্বানপুর্ব্বক জিজ্ঞাসা করিলেন—

 বৎস! কি নিমিত্ত তুমি কাতর হইয়াছ, আমার যদি শ্রোতব্য হয় ত বল। তোমার মাতুল কহিতেছেন যে তুমি পাণ্ডুর ও কুশ হইয়া যাইতেছ, কিন্তু আমি ত চিন্তা করিয়াও তোমার শোকের কারণ দেখি না। এই রাজ্যের সমস্ত ঐশ্বর্য্য