পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫]
কুরু পাণ্ডব
৭১

 ভীমসেন কহিলেন―হে ধর্ম্মরাজ! আমি মনে করিতেছি বল্লব নাম ধারণ করিয়া সূপকার বলিয়া পরিচয় দিব। পাককার্য্যে আমার বিশেষ নৈপুণ্য আছে। বিরাটরাজের উপস্থিত কিঙ্করগণ অপেক্ষা আমি নিশ্চয়ই উৎকৃষ্টতর ব্যঞ্জন প্রস্তুত করিয়া রাজাকে তৃপ্ত করিতে পারিব। এতদ্ব্যতীত মল্ল ক্রীড়াস্থলে আমি বাহুবলের পরিচয় প্রদান করিয়া সকলের সম্মানভাজন হইতে পারিব সন্দেহ নাই। পরিচয় চাহিলে আমিও কহিব যে, আমি রাজা যুধিষ্ঠিরের সূপকার ও মল্লযোদ্ধা ছিলাম। হে রাজন! এই ভাবে আমি নির্ব্বিঘ্নে কালক্ষেপ করিতে পারিব।

 তখন যুধিষ্ঠির অর্জ্জুনকে লক্ষ্য করিয়া বলিতে লাগিলেন—

 যে মহাবীর তেজস্বীর মধ্যে অগ্নিতুল্য, যাঁহার বাহুদ্বয় সমভাবে জ্যা-ঘাতদ্বারা কিণাঙ্কিত, সেই সব্যসাচী কোন্ ছদ্মবেশ অবলম্বন করিবেন?

 তদুত্তরে অর্জ্জুন কহিলেন―

 হে ধর্ম্মরাজ! তুমি যথার্থই বলিতেছ যে, আমার জ্যা-ঘাতচিহ্নিত ভুজদ্বয় ও যুদ্ধগর্ব্বিত সুদৃঢ় শরীর গোপন করা সহজ নহে, সেইজন্য আমি সঙ্কল্প করিয়াছি যে, মস্তকে বেণী ও কর্ণে কুণ্ডল ধারণপূর্ব্বক বলয়শ্রেণীদ্বারা কিণাঙ্কিত হস্ত আচ্ছাদিত করিয়া বৃহন্নলা নামে নর্ত্তক সাজিব। আমি ইন্দ্রালয়ে বাসকালে গান্ধর্ব্ব-বিদ্যায় বিশেষ পারদর্শিতা লাভ করিয়াছিলাম, সুতরাং আমি মহিলাদিগকে নৃত্যগীতাদি