পাতা:কৃষ্ণকলি ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জটাধর বকশী

চান না, অন্য লোককে কিছু বলবার অবকাশও দেন না। চায়ের আড্ডার সবাই একে উপাধি দিয়েছে—বিরাট ছেঁদা, অর্থাৎ দি গ্রেট বোর।

 রামতারণবাবু, বলছিলেন, আরে না না, তোমাদের ধারণা একবারে ভুল। ভূত আর প্রেত স্বতন্ত্র জীব, আমি বুঝিয়ে দিচ্ছি শোন। মৃত্যুর পর মানুষ যত দিন বায়ুভূত নিরালম্ব নিরাশ্রয় হয়ে থাকে, অর্থাৎ যে পর্যন্ত আবার জন্মগ্রহণ না করে তত দিন সে প্রেত। কিন্তু  স্কুল মাস্টার কপিল গুপ্ত বললেন, অর্থাৎ পরলোকের ভ্যাগাবণ্ডরাই প্রেত।

 বক্তৃতায় বাধা পাওয়ায় রামতারণ বিরক্ত হয়ে বললেন, ফাজলামি রাখ, যা বলছি শুনে যাও। মৃত্যুর পর মানুষ চিরকাল প্রেত হয়ে থাকে না, আবার জন্মায়। ধ্রুবং জন্ম মৃতস্যচ। কিন্তু যারা ভূত তারা চিরকালই ভূত।

 কপিল গুপ্ত আবার বললেন, বুঝেছি। যেমন গাজনের সন্ন্যাসী আর লোটা-চিমটা-কম্বল-ধারী বারমেসে সন্ন্যাসী।

 —আঃ চুপ কর না। মরা মাননুষের আত্মা হল প্রেত, বিলিতী গোস্টও প্রেত। কিন্তু পিশাচ আর পল্টারগাইস্টকে ভূত বলা যেতে পারে। ভূত হল অপদেবতা, তারা নাকে কথা কয়, ভয় দেখায়, ঘাড় মটকায়, নানা রকম উপদ্রব করে। কিন্তু প্রেত সে রকম নয়, জীবদ্দশায় যার যেমন স্বভাব, প্রেত হলেও তাই থাকে। তবে চলিত কথায় প্রেতকেও লোকে ভূত বলে।

১১