পাতা:কৃষ্ণকলি ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কৃষ্ণকলি

নির্বাচন—এ কথা বললে সিটয়েশন একটা ডেলিকেট হবে বটে। কি বললে ভাল হয় আপনিই স্থির করুন।

 অনূকূলবাবু বললেন, বরনারীবরণ মন্দ হবে না। যুবতী প্রৌঢ়া বৃদ্ধা কারও বরনারী হতে বাধা নেই। ফুলের মুকুট আর ঘড়ি না দেওয়াই ভাল, একটা জাঁকালো বরমাল্য দিলেই চলবে।

 সোহনলাল বললেন, বরনারীর ইলেকশন কি রকম হবে? আমার মতে সিক্রেট ব্যালটের ব্যবস্থা করা দরকার, তা হলে সকলেই চক্ষুলজ্জা ত্যাগ করে ভোট দিতে পারবে।

 অনুকূলবাবু বললেন, তাতে জনমতের নির্ধারণ হবে বটে, কিন্তু তার পরিণামটা ভেবে দেখেছ? তারক মল্লিকের মেয়ে কিরণশশী—আজকাল যে হনাদিনী দেবী নাম নিয়ে গৌড়ীয় লাস্যনৃত্যম্, দেখাচ্ছে—সেই সব চেয়ে বেশী ভোট পাবে। তার পরেই বোধ হয় সরেন ভৌমিকের গুজরাটী স্ত্রী কলাবতী ভৌমিক কিংবা আমাদের ডকটর নিয়োগীর স্ত্রী বঞ্জুলা নিয়োগীর চান্স। ভোটে যেই জিতুক, সদস্যারা সবাই তাঁদের স্বামীদের ওপর চটবেন, বাড়িতে মুখ হাঁড়ি করে থাকবেন, একটা পারিবারিক অশান্তির সৃষ্টি হবে। আমাদের মেয়েরা এখনও পাশ্চাত্ত্য নারীর উদারতা পায় নি, সবাই শ্রীরাধার মতন জেলস। তা ছাড়া ব্যালটে বিস্তর সময় লাগবে, লোকের ধৈর্য থাকবে না। ক্লাবের মেম্বাররা আমোদ চায়, ব্যালটের মতন নীরস ব্যাপারে সময় নষ্ট করা পছন্দ করবে না। ব্যালট নয়, সেকালের স্বয়ংবর সভার মতন কিছু করাই ভাল। সভায় যাঁরা

৩৪