পাতা:কৃষ্ণকলি ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
একগুঁয়ে বার্থা

দাপিয়ে বেড়ায়। জীবনের সব লক্ষণই তো বর্তমান, গোঁ ধরবে তা আর বিচিত্র কি।

 —হল না গাঙুলী মশায়। মোটর গাড়ি যদি লোহা-পেতলচুর খেয়ে দেহের ক্ষয় মেরামত করতে পারত, আর মাঝে মাঝে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পিছনের খোপ থেকে একটি বাচ্চা মোটর প্রসব করত তবেই জীবিত বলা চলত। জীবনের লক্ষণ হচ্ছে—আহার গ্রহণ, শরীর পোষণ, মল বর্জন, আর বংশবৃদ্ধি।

 —ওহে প্রফেসার, নিজের ফাঁদে নিজে পড়ে গেছ। তুমি যে সব লক্ষণ বললে তাতে আগুনকেও সজীব পদার্থ বলা চলে। আশপাশ থেকে দাহ্য উপাদান আত্মসাৎ করে পুষ্ট হয়, ধোঁয়া আর ছাই ত্যাগ করে, সবিধে পেলেই ব্যাপ্ত হয়ে বংশবৃদ্ধি করে।

 ধীরেন দত্ত হেসে বললেন, হার মানলুম গাঙুলী মশায়। কিন্তু এঞ্জিনের বা আগুনের গোঁ আছে এ কথা মানি না।

 —জোর করে কিছুই বলা যায় না, জগৎটাই যে প্রাণময়।

 একজন প্রৌঢ় ভদ্রলোক এক কোণে হেলান দিয়ে চোখ বুঁজে সব কথা শুনছিলেন। মাথায় টাক, বড় গোঁফ, কপালে একটা কাটা দাগ, চোখে পরে চশমা। ইনি খাড়া হয়ে বসে বললেন, মশায়রা যদি অনুমতি দেন তো একটা কথা নিবেদন করি। আমি একটা মোটর গাড়ি জানি যার অতি ভয়ানক গোঁ ছিল। আমার নিজেরই গাড়ি, জার্মন বার্থা কার।

 অতুল রক্ষিত বললেন, ব্যাপারটা খুলে বলুন সার।

৪৯