অষ্টম পরিচ্ছেদ রূপে সরিয়া গেলে নিশাকর সোণাকে ডাকিয়া বলিলেন, “তোমরা বাবুর কাছে কত দিন আছ ?” - -- সোণা। এই—যত দিন এখানে এসেছেন তত দিন আছি । নিশা । তবে অল্পদিনই ? পাও কি ? সোণী । তিন টাকা মাহিয়ান, খোরাক পোষাক । নিশা । এত অল্প বেতনে তোমাদের মত খানসামার পোষায় কি ? কথাটা শুনিয়া সোণ খানসাম গলিয়া গেল। বলিল, “কি করি, এখানে আর কোথায় চাকরি যোটে ?” নিশা । চাকরির ভাবনা কি ? আমাদের দেশে গেলে তোমাদের লুপে নেয়। পাচ, সাত, দশ টাকা অনায়াসেই মাসে পাও । সোণা। অনুগ্রহ করিয়৷ যদি সঙ্গে লইয়া যান। নিশা । নিয়ে যাব কি, অমন মুনিবের চাকরি ছাড়বে ? সোণা। মুনিব মন্দ নয়, কিন্তু মুনিব ঠাকুরুণ বড় হারামজাদা। নিশা । হাতে হাতে তার প্রমাণ আমি পেয়েছি। আমার সঙ্গে তোমার যাওয়াই স্থির ত ? সোণা। স্থির বৈ কি । নিশ। তবে যাবার সময় তোমার মুনিবের একটি উপকার করিয়া যাও। কিন্তু । বড় সাবধানের কাজ। পারবে কি ? সোণা। ভাল কাজ হয় ত পারব না কেন ? নিশা। তোমার মুনিবের পক্ষে ভাল, মুনিবনীর পক্ষে বড় মন্দ । সোণা। তবে এখনই বলুন, বিলম্বে কাজ নাই। তাতে আমি বড় রাজি। নিশা। ঠাকুরুণটি আমাকে বলিয়া পাঠাইয়াছেন, চিত্রার বাধাঘাটে বসিয়া থাকিতে, রাত্রে আমার সঙ্গে গোপনে সাক্ষাৎ করিবেন। বুঝেছ ? আমিও স্বীকার হইয়াছি। আমার অভিপ্রায় যে, তোমার মুনিবের চোখ ফুটায়ে দিই। তুমি আস্তে আস্তে কথাটি তোমার মুনিবকে জানিয়ে আসিতে পার ? - -A সোণা। এখনি—ও পাপ মলেই বাচি।
পাতা:কৃষ্ণকান্তের উইল-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১০০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।