পাতা:কৃষ্ণকান্তের উইল-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বিতীয় খণ্ড—অষ্টম পরিচ্ছেদ పె& নিশা। এখন নয়, এখন আমি ঘাটে গিয়া বসিয়া থাকি। তুমি সতর্ক থেকে। যখন দেখবে, ঠাকুরুণটি ঘাটের দিকে চলিলেন, তখনি গিয়া তোমার মুনিবকে বলিয়া দিও। রূপে। কিছু জানিতে না পারে। তার পর আমার সঙ্গে যুটে।। “যে আজ্ঞে" বলিয়া সোণা নিশাকরের পায়ের ধূলা গ্রহণ করিল। তখন নিশাকর হেলিতে দুলিতে গজেপ্রগমনে চিত্রাতারশোভী সোপানাবলীর উপর গিয়া বসিলেন। অন্ধকারে নক্ষত্রচ্ছায়াপ্রদীপ্ত চিত্রাবারি নীরবে চলিতেছে। চারি দিকে শৃগালকুকুরাদি বহুবিধ রব করিতেছে। কোথাও দূরবর্তী নৌকার উপর বসিয়া ধীবর উচ্চৈঃস্বরে খামাবিষয় গায়িতেছে। তদ্ভিন্ন সেই বিজন প্রাস্তর মধ্যে কোন শব্দ শোনা যাইতেছে না। নিশাকর সেই গীত শুনিতেছেন এবং গোবিন্দলালের বাসগৃহের দ্বিতল কক্ষের বাতায়ননিঃস্থত উজ্জল দীপালোক দর্শন করিতেছেন । এবং মনে মনে ভাবিতেছেন, “আমি কি নৃশংস ! এক জন স্ত্রীলোকের সৰ্ব্বনাশ করিবার জন্য কত কৌশল করিতেছি । অথবা নৃশংসতাই বা কি ? তুষ্টের দমন অবশুই কৰ্ত্তব্য । যখন বন্ধুর কন্যার জীবনরক্ষার্থ এ কার্য্য বন্ধুর নিকট স্বীকার করিয়াছি, তখন অবশ্ব করিব । কিন্তু আমার মন ইহাতে প্রসন্ন নয়। রোহিণী পাপীয়সী, পাপের দণ্ড দিব ; পাপম্রোতের রোধ করিব ; ইহাতে অপ্রসাদই বা কেন ? বলিতে পারি না, বোধ হয় সোজা পথে গেলে এত ভাবিতাম না। বাক পথে গিয়াছি বলিয়াই এত সঙ্কোচ হইতেছে। আর পাপ পুণ্যের দণ্ড পুরস্কার দিবার আমি কে ? আমার পাপ পুণ্যের যিনি দণ্ড পুরস্কার করিবেন, রোহিণীরও তিনি বিচারকর্তা । বলিতে পারি না, হয়ত তিনিই আমাকে এই কার্য্যে নিয়োজিত করিয়াছেন। কি জানি, -- “ত্বয়া হৃষীকেশ হৃদি স্থিতেন ~ যথা নিযুক্তোহস্মি তথা করোমি ।” এইরূপ চিন্তা করিতে করিতে, রাত্রি প্রহরাতীত হইল। তখন নিশাকর দেখিলেন, নিঃশব্দ পাদবিক্ষেপে রোহিণী আসিয়া কাছে দাড়াইল । নিশ্চয়কে সুনিশ্চিত করিবার জন্য ,* নিশাকর জিজ্ঞাসা করিলেন, “কে গা ?” : রোহিণীও নিশ্চয়কে সুনিশ্লি , to

. বলিল, “তুমি কে ?”