দ্বিতীয় খণ্ড-একাদশ পরিচ্ছেদ ss অনুসন্ধান করিয়া উঠিতে পারিলেন না। শেষে তিনি আসামী ফেরার বলিয়া এক খাতেম। রিপোর্ট দাখিল করিলেন । t - তখন যশোহর হইতে ফিচেল খাঁ নামে এক জন সুদক্ষ ডিটেক্টৰ, ইনস্পেক্টর প্রেরিত হইল। ফিচেল খাঁর অনুসন্ধানপ্রণালী আমাদিগের সবিস্তারে বলিবার প্রয়োজন নাই। কতকগুলি চিঠিপত্র তিনি বাড়ী তল্লাসীতে পাইলেন । তদ্বারা তিনি গোবিন্দলালের প্রকৃত নাম ধাম অবধারিত করিলেন। বলা বাহুল্য যে, তিনি কষ্ট স্বীকার করিয়া ছদ্মবেশে হরিদ্রাগ্রাম পৰ্য্যন্ত গমন করিলেন। কিন্তু গোবিন্দলাল হরিদ্রাগ্রামে যান নাই, সুতরাং ফিচেল খ৷ সেখানে গোবিন্দলালকে প্রাপ্ত না হইয়া প্রত্যাবৰ্ত্তন করিলেন। এ দিকে নিশাকর দাস সে করাল কালসমান রজনীতে বিপন্ন রোহিণীকে পরিত্যাগ করিয়া প্রসাদপুরের বাজারে আপনার বাসায় আসিয়া উপস্থিত হইলেন। সেখানে মাধবীনাথ র্তাহার প্রতীক্ষা করিতেছিলেন। মাধবীনাথ গোবিন্দলালের নিকট সুপরিচিত বলিয়া স্বয়ং র্তাহার নিকট গমন করেন নাই ; এক্ষণে নিশাকর আসিয়া তাহাকে সবিশেষ বিজ্ঞাপিত করিলেন। শুনিয়া মাধবীনাথ বলিলেন, “কাজ ভাল হয় নাই। একটা খুনোখুনি হইতে পারে।” ইহার পরিণাম কি ঘটে, জানিবার জন্য উভয়ে প্রসাদপুরের বাজারে প্রচ্ছন্নভাবে অতি সাবধানে অবস্থিতি করিতে লাগিলেন। প্রভাতেই শুনিলেন যে, চুনিলাল দত্ত আপন স্ত্রীকে খুন করিয়া পলাইয়াছে। তাহারা বিশেষ ভৗত ও শোকাকুল হইলেন ; ভয় গোবিনলালের জন্য ; কিন্তু পরিশেষে দেখিলেন, দারোগী কিছু করিতে পারিলেন না । গোবিন্দলালের কোন অনুসন্ধান নাই। তখন র্তাহার এক প্রকার নিশ্চিন্ত হইয়া, তথাচ অত্যন্ত বিষন্নভাবে স্বস্থানে প্রস্থান করিলেন । একাদশ পরিচ্ছেদ তৃতীয় বৎসর ভ্রমর মরে নাই। কেন মরিল না, তাহা জানি না। এ সংসারে বিশেষ দুঃখ এই যে, মরিবার উপযুক্ত সময়ে কেহ মরে না। অসময়ে সবাই মরে। ভ্রমর যে মরিল না, বুঝি ইহাই তাহার কারণ। যাহাই হউক, ভ্রমর উৎকট রোগ হইতে কিয়দংশে মুক্তি পাইয়াছে। ভ্রমর আবার পিত্রালয়ে। মাধবীনাথ গোবিন্দলালের যে সংবাদ আনিয়াছিলেন, তাহার পত্নী অতি সঙ্গোপনে তাহ জ্যেষ্ঠা কন্যা ভ্রমরের ভগিনীর নিকট বলিয়াছিলেন। র্তাহার
পাতা:কৃষ্ণকান্তের উইল-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১০৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।