দ্বিতীয় খণ্ড—দ্বাদশ পরিচ্ছেদ o\లి বলিলেন, “বাপু ! মাজিষ্ট্রেট সাহেবের কাছে যা বলিয়াছ, তা বলিয়াছ। এখন জজ সাহেবের কাছে ভিন্ন প্রকার বলিতে হইবে । বলিতে হইবে যে, আমরা কিছু জানি না । এই পাঁচ পাঁচ শত টাকা নগদ লও। আসামী খালাস হইলে আর পাঁচ পাঁচ শত দিব।” সাক্ষীরা বলিল, “খেলাপ হলফের দায়ে মারা যাইব যে ।” - মাধবীনাথ বলিলেন, “ভয় নাই । আমি টাকা খরচ করিয়া সাক্ষীর দ্বারা প্রমাণ করাইব যে, ফিচেল খ তোমাদিগের মারপিট করিয়া মাজিষ্ট্রেট সাহেবের কাছে মিথ্য সাক্ষ্য দেওয়াইয়াছে।” সাক্ষীরা চতুর্দশ পুরুষ মধ্যে কখনও হাজার টাকা একত্রে দেখে নাই । তৎক্ষণাৎ সম্মত হইল । সেশনে বিচারের দিন উপস্থিত হইল। গোবিন্দলাল কাটগড়ার ভিতর । প্রথম সাক্ষী উপস্থিত হইয়া হলফ পড়িল । উকীল সরকার তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “তুমি এই গোবিন্দলাল ওরফে চুনিলালুকে চেন ?” সাক্ষী । কই—না—মনে ত হয় না। উকীল। কখনও দেখিয়াছ ? সাক্ষী । না । , উকীল। রোহিণীকে চিনিতে ? সাক্ষী । কোন রোহিণী ? উকীল। প্রসাদপুরের কুঠিতে যে ছিল ? সাক্ষী। আমার বাপের পুরুষে কখনও প্রসাদপুরের কুঠিতে যাই নাই । উকীল। রোহিণী কি প্রকারে মরিয়াছে ? সাক্ষী শুনিতেছি আত্মহত্যা হইয়াছে। উকীল। খুনের বিষয় কিছু জান ? সাক্ষী । কিছু না । উকীল তখন, সাক্ষী, মাজিষ্ট্রেট সাহেবের কাছে যে জোবানবন্দী দিয়াছিল, তাহ পাঠ করিয়া সাক্ষীকে শুনাইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “কেমন, তুমি মাজিষ্ট্রেট সাহেবের কাছে এই স্নকল কথা বলিয়াছিলে ?” সাক্ষী। হা, বলিয়াছিলাম । উকীল। যদি কিছু জান না, তবে কেন বলিয়াছিলে ?
পাতা:কৃষ্ণকান্তের উইল-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১০৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।