প্রথম খণ্ড-দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ * তোমা গের বাড়ীতে কি দোওয়াত কলম নাই যে, আমি ঘাড়ে कब्रेिच्न হর। অামার কোন উদ্দেশ্য আছে—নচেং তোমাকে এত টাকা দিলাম কেন ? : ব্র । আমিও তাই ভাবিতেছি বটে—ভাল বলেছ ভাই রে । - হর । তুমি দোওয়াত কলম লইয়া গেলে কেহ ভাবিলেও ভাবিতে পারে, আজি এটা কেন ? তুমি সরকারি কালি কলমকে গালি পাড়িও ; তাহা হইলেই শোধরাইবে। ত্র। তা সরকারি কালি কলমকে শুধু কেন ? সরকারকে শুদ্ধ গালি পাড়িতে পারিব। , হর। তত আবশ্বক নাই। এক্ষণে আসল কৰ্ম্ম আরম্ভ কর। তখন হরলাল দুষ্টখানি জেনেরাল লেটর কাগজ ব্রহ্মানন্দের হাতে দিলেন। ব্ৰহ্মানন্দ বলিলেন, “এ যে সরকারি কাগজ দেখিতে পাই ।” - “সরকারি নহে—কিন্তু উকীলের বাড়ীর লেখাপড়া এই কাগজে হইয়া থাকে। কৰ্ত্তাও এই কাগজে উইল লেখাইয়া থাকেন, জানি । এজন্যে এই কাগজ আমি সংগ্ৰহ করিয়াছি। যাহা বলি, তাহা এই কালি কলমে লেখ ।” ব্ৰহ্মানন্দ লিখিতে আরম্ভ করিল। হরলাল একখানি উইল লেখাইয়া দিলেন। তাহার মৰ্ম্মার্থ এই। কৃষ্ণকান্ত রায় উইল করিতেছেন। র্তাহার নামে যত সম্পত্তি আছে, তাহার বিভাগ কৃষ্ণকাস্তের পরলোকাস্তে এইরূপ হইবে। যথা, বিনোদলাল তিন আনা, গোবিন্দলাল এক পাই, গৃহিণী এক পাই, শৈলবতী এক পাই, হরলালের পুত্র এক পাই, হরলাল জ্যেষ্ঠ পুত্র বলিয়া অবশিষ্ট বারে আন । - লেখা হইলে ব্ৰহ্মানন্দ কছিলেন, “এখন ত উইল লেখা হইল-দস্তখত করে কে ?” *আমি।” বলিয়া হরলাল ঐ উইলে কৃষ্ণকান্ত রায়ের এবং চারি জন সাক্ষীর দস্তখত করিয়া দিলেন । ব্ৰহ্মানন্দ কহিলেন, “ভাল, এ ত জাল হইল।” হর। এই সাচ্চ উইল হইল, বৈকালে যাহা লিখিবে, সেই জাল । ব্ৰহ্ম। কিসে ? হর । তুমি যখন উইল লিখিতে যাইবে, তখন এই উইলখানি আপনার পিরানের পকেটে লুকাইয়া লইয়। যাইবে । সেখানে গিয়া এই কালি কলমে র্তাহীদের ইচ্ছামত উইল লিখিবে। কাগজ, কলম, কালি, লেখক একই ; সুতরাং দুইখান উইলই দেখিতে একপ্রকার হইবে। পরে উইল পড়িয়া শুনান ও দস্তখত হইয়া গেলে শেষে তুমি স্বাক্ষর করিবার জন্য
পাতা:কৃষ্ণকান্তের উইল-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।