কৃষ্ণকাস্তের উইল ইবে। সকলের দিকে পশ্চাৎ ফিরিয়া দস্তখত করিবে। সেই অবকাশে উইলখানি বদলাইয়া ইবে । এইখানি কৰ্ত্তাকে দিয়া, কৰ্ত্তার উইলখানি আমাকে আনিয়া দিবে। ব্ৰহ্মানন্দ ঘোষ ভাবিতে লাগিল। বলিল, “বলিলে কি হয়—বুদ্ধির খেলটা খেলোছ ील ” হর। ভাবিতেছ কি ? ত্র। ইচ্ছা করে বটে, কিন্তু ভয় করে । তোমার টাকা ফিরাইয়া লও। আমি কিন্তু নলের মধ্যে থাকিব না । “টাকা দাও।” বলিয়া হরলাল হাত পাতিল। ব্রহ্মানন্দ ঘোষ নোট ফিরাইয়া দিল । নাট লইয়া হরলাল উঠিয়া চলিয়া যাইতেছিল। ব্ৰহ্মানন্দ তখন আবার তাহাকে ডাকিয়া লিল, “বলি, ভায়া কি গেলে ?” “না” বলিয়া হরলাল ফিরিল। ত্র । তুমি এখন পাচ শত টাকা দিলে। আর কি দিবে ? হর। তুমি সেই উইলখানি আনিয়া দিলে আর পাঁচ শত দিব। ব্র । অনেকটা—টীকা—লোভ ছাড়া যায় না । হর। তবে তুমি রাজি হইলে ? ত্র। রাজি না হইয়াই বা কি করি ? কিন্তু বদল করি কি প্রকারে ? দেখিতে ইবে যে । হর। কেন দেখিতে পাইবে? আমি তোমার সম্মুখে উইল বদল করিয়া লইতেছি, ম দেখ দেখি, টেয় পাও কি না । , হরলালের অন্য বিদ্যা থাকুক না থাকুক, হস্তকৌশল বিদ্যায় যৎকিঞ্চিৎ শিক্ষাপ্রাপ্ত য়াছিলেন। তখন উইলখানি পকেটে রাখিলেন, আর একখানি কাগজ হাতে লইয়া হাতে লিখিবার উপক্রম করিলেন। ইত্যবসরে হাতের কাগজ পকেটে, পকেটের কাগজ তে কি প্রকারে আসিল, ব্ৰহ্মানন্দ তাহা কিছুই লক্ষিত করিতে পারিলেন না। ব্রহ্মানন্দ লালের হস্তকৌশলের প্রশংসা করিতে লাগিলেন। হরলাল বলিলেন, “এই কৌশলটি মায় শিখাইয়া দিব।” এই বলিয়া হরলাল সেই অভ্যস্ত কৌশল ব্ৰহ্মানন্দকে অভ্যাস "াইতে লাগিলেন । ছই তিন দণ্ডে ব্রহ্মানন্দের সেই কৌশলটি অভ্যস্ত হইল । তখন হরলাল কহিল যে, মি এক্ষণে চলিলাম। সন্ধ্যার পর বাকি টাকা লইয়া আসিব ।” বলিয়। সে বিদায় হইল। t
পাতা:কৃষ্ণকান্তের উইল-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।