পাতা:কৃষ্ণকান্তের উইল-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

}8 কৃষ্ণকাভের छैझेल হর । আমার থাঙ্কিবার যে নাই। রোহি । তা যাও । হর। উইল ? রো। আমার কাছে থাক্ । A. হর। সে কি ? উইল আমায় দিবে না ? রোহি । তোমার কাছে থাকাও যে, আমার কাছে থাকাও সে । হর। যদি আমাকে উইল দিবে না, তবে ইহা চুরি করিলে কেন ? রে। আপনারই জন্য। আপনারই জন্য ইহা রহিল। যখন আপনি বিধবা বিবাহ করিবেন, আপনার স্ত্রীকে এ উইল দিব। আপনি লইয়া ছিড়িয়া ফেলিবেন । হরলাল বুঝিল, বলিল, “তা হবে না—রোহিণি ! টাকা যাহা চাও, দিব।” রো। লক্ষ টাকা দিলেও নয়। যাহা দিবে বলিয়াছিলে, তাই চাই । হর । তা হয় না। আমি জাল করি, চুরি করি, আপনারই হকের জন্য। তুমি চুরি করিয়াছ, কার হকের জন্য ? রোহিণীর মুখ শুখাইল। রোহিণী অধোবদনে রহিল। হরলাল বলিতে লাগিল, “আমি যাই হই-কৃষ্ণকান্ত রায়ের পুত্র। যে চুরি করিয়াছে, তাহাকে কখনও গৃহিণী করিতে পারিব না।” রোহিণী সহসা দাড়াইয়া উঠিয়া, মাথার কাপড় উচু করিয়া তুলিয়া, হরলালের মুখপানে চাহিল ; বলিল, “আমি চোর! তুমি সাধু! কে আমাকে চুরি করিতে বলিয়াছিল ? কে আমাকে বড় লোভ দেখাইল ? সরল স্ত্রীলোক দেখিয়া কে প্রবঞ্চনা করিল ? যে শঠতার চেয়ে আর শঠত নাই, যে মিথ্যার চেয়ে আর মিথ্যা নাই, যা ইতরে বর্বরে মুখেও আনিতে পারে না, তুমি কৃষ্ণকান্ত রায়ের পুত্র হইয়া তাই করিলে ? হায়! হায়! আমি তোমার অযোগ্য ! তোমার মত নীচ শঠকে গ্রহণ করে, এমন হতভাগী কেহ নাই। তুমি যদি মেয়ে মানুষ হইতে, তোমাকে আজ, যা দিয়া ঘর ঝাট দিই, তাই দেখাইতাম। তুমি পুরুষ মানুষ, মানে মানে দূর হও।” হরলাল বুঝিল, উপযুক্ত হইয়াছে। মানে মানে বিদায় হইল—যাইবার সময় একটু টিপি টিপি হাসিয়া গেল। রোহিণীও বুঝিল যে, উপযুক্ত হইয়াছে—উভয় পক্ষে। সেও খোপাট একটু আঁটিয়া নিয়া রাধিতে বসিল। রাগে খোপাট খুলিয়া গিয়াছিল। তার চোখে জল আসিতেছিল। :