কৃষ্ণকাম্ভের উইল । क्ककाउ िक বুঝিতে পারিলেন না যে, কি শব্দ হইল। কোন সাড়া লিন નાকাণ পাতিয়া রছিলেন। রোহিণীও দেখিলেন যে, নাসিকাগজনশদ বন্ধ হইয়াছে। রোহিণী বুঝিলেন, কৃষ্ণকাস্তের ঘুম ভাঙ্গিয়াছে। রোহিণী নি:শব্দে স্থির হইয়। রাহলেন। . কৃষ্ণকান্ত বলিলেন, “কে ও ?” কেহ কোন উত্তর দিল না । - সে রোহিণী আর নাই। রোহিণী এখন শীর্ণ, ক্লিষ্ট, বিবশা—বোধ হয় একটু ভয় ইইয়াছিল—একটু নিশ্বাসের শব্দ হইয়াছিল। নিশ্বাসের শব্দ কৃষ্ণকাস্তের কাণে গেল। কৃষ্ণকান্ত হরিকে বার কয় ডাকিলেন। রোহিণী মনে করিলে এই অবসরে পলাইতে পারিত, কিন্তু তাহা হইলে গোবিন্দলালের প্রতীকার হয় না। রোহিণী মনে মনে ভাবিল, “ছন্ধৰ্ম্মের জন্য সে দিন ষে সাহস করিয়াছিলাম, আজ সংকৰ্ম্মের জন্য তাহা করিতে পারি ন! কেন ? ধরা পড়ি পড়িব ।” রোহিণী পলাইল না। কৃষ্ণকান্ত কয় বার হরিকে ডাকিয়া কোন উত্তর পাইলেন না, হরি স্থানান্তরে মুখামুসন্ধানে গমন করিয়াছিল—শীঘ্ৰ আসিবে। তখন কৃষ্ণকান্ত উপাধানতল হইতে অগ্নিগর্ভ দীপশলাকা গ্রহণপূর্বক সহসা আলোক উৎপাদন করিলেন। শলাকালোকে দেখিলেন, গৃহমধ্যে, দেরাজের কাছে, স্ত্রীলোক । জালিত শলাকাসংযোগে কৃষ্ণকান্ত বাতি জ্বালিলেন। স্ত্রীলোককে সম্বোধন করিয়া বলিলেন, “তুমি কে ?” রোহিণী কৃষ্ণকাস্তের কাছে গেল । বলিল, “আমি রোহিণী |" কৃষ্ণকান্ত বিস্মিত হইলেন, বলিলেন,"এত রাত্রে অন্ধকারে এখানে কি করিতেছিলে ?” রোহিণী বলিল, “চুরি করিতেছিলাম।” * পদ রহস্য রাখ। কেন এ অবস্থায় তোমাকে দেখিল। বল। তুমি চুরি করিতে আসিয়াছ, এ কথা সহসা আমার বিশ্বাস হয় ন, কিন্তু চোরের অবস্থাতেই তোমাকে দেখিতেছি । রোহিণী বলিল,"তবে আমি যাহা করিতে আসিয়াছি, তাহ আপনার সম্মুখেই করি, দেখুন। পরে আমার প্রতি যেমন ব্যবহার উচিত হয়, করিবেন। আমি ধরা পড়িয়াছি, পলাইতে পারিব না। পলাইব ম৷ ” এই বলিয়া রোহিণী, দেরাজের কাছে প্রত্যাগমন করিয়া দেরাজ টানিয়া খুলিল । তাহার ভিতর হইতে জাল উইল বাহির করিয়া, প্রকৃত উইল সংস্থাপিত করিল। পরে জাল উইলখানি খণ্ড খণ্ড করিয়া ফাড়িয়া ফেলিল ।
পাতা:কৃষ্ণকান্তের উইল-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৩০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।