কিন্তু কাল তোমার মাথা মুড়াইয়া ঘোল ঢালিয়া গ্রামের বাহির করিয়া দিব। আৰ ভূমি রোহিণী সে রাত্রে আবদ্ধ রহিল। দশম পরিচ্ছেদ সেই রাত্রের প্রভাতে শয্যাগৃহে মুক্ত বাতায়নপথে দাড়াইয়া, গোবিন্দলাল। ঠিক প্রভাত হয় নাই—কিছু বাকি আছে। এখনও গৃহপ্রাঙ্গণস্থ কামিনীকুঞ্জে, কোকিল প্রথম ডাক ডাকে নাই। কিন্তু দোয়েল গীত আরম্ভ করিয়াছে। উষার শীতল বাতাস উঠিয়াছে— গোবিন্দলাল বাতায়নপথ মুক্ত করিয়া, সেই উদ্যানস্থিত মল্লিকা গন্ধরাজ কুটজের পরিমলবাহী শীতল প্রভাতবায়ু সেবনজন্য তৎসমীপে দাড়াইলেন। অমনি তাহার পাশে আসিয়া একটি ক্ষুদ্রশরীরা বালিকা দাড়াইল । * গোবিন্দলাল বলিলেন, “আবার তুমি এখানে কেন ?” বালিকা বলিল, “তুমি এখানে কেন?” বলিতে হইবে না যে, এই বালিকা গোবিনালালের স্ত্রী। t গোবিন্দ। আমি একটু বাতাস খেতে এলেম, তাও কি তোমার সইল না ? বালিকা বলিল, “সবে কেন ? এখনই আবার খাই খাই ? ঘরের সামগ্ৰী খেয়ে মন উঠে না, আবার মাঠে ঘাটে বাতাস খেতে উকি মারেন p গো। ঘরের সামগ্রী এত কি খাইলাম ? “কেন, এইমাত্র আমার কাছে গালি খাইয়াছ ?” গোবিন্দ। জান না, ভোমরা, গালি খাইলে যদি বাঙ্গালীর ছেলের পেট ভরিত, তাহ হইলে, এ দেশের লোক এত দিনে সগোষ্ঠী বদ হজমে মরিয়া पट्टैि७ । 8 जांभ&ौग्नेि अङि সহজে বাঙ্গালা পেটে জীর্ণ হয়। তুমি আর একবার নথ নাড়ে, ভোমরা, আমি আর একবার দেখি । গোবিন্দলালের পত্নীর যথার্থ নাম কৃষ্ণমোহিনী, কি কৃষ্ণকামিনী, কি অনঙ্গমঞ্জরী, কি এমনই একটা কি তাহার পিতা মাতা রাখিয়াছিল, তাহ ইতিহাসে লেখে না। অব্যবহারে সে নাম লোপ প্রাপ্ত হইয়াছিল। তাহার আদরের নাম "ভ্রমর” বা “ভোমরা” । সার্থকতাবশতঃ সেই নামই প্রচলিত হইয়াছিল। ভোমরা কালো ।
পাতা:কৃষ্ণকান্তের উইল-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৩২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।