পাতা:কৃষ্ণকান্তের উইল-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

-,-- ਾਂ নথ নাড়ার পক্ষে বিশেষ আপত্তি জানাইবার জঙ্ক নথ খুলিয়, একটা ছকে : রাখিয়া, গোবিন্দ্রলালের নাক ধরিয়া নাড়িয়া দিল। পরে গোবিন্দ্রলালের মুখপানে চাহিয়া । মৃদ্ধ মৃত্যু হাসিতে লাগিল,-মনে মনে জ্ঞান, যেন বড় একটা কীৰ্ত্তি করিয়াছি। গোবিন্দলালও । তাহার মুখপানে চাহিয়৷ অতৃপ্তলোচনে দৃষ্টি করিতেছিলেন। সেই সময়ে, সূর্য্যোদয়সূচক প্রথম রশ্মিকিরীট পূৰ্ব্বগগনে দেখা দিল—তাহার মৃত্নল জ্যোতিঃপুঞ্জ ভূমণ্ডলে প্রতিফলিত হইতে লাগিল। নবীনালোক পূৰ্ব্বদিক হইতে আসিয়া পূৰ্ব্বমুখী ভ্রমরের মুখের উপর পড়িয়াছিল। সেই উজ্জল, পরিষ্কার, কোমল, শ্বামচ্ছবি মুখকাস্তির উপর কোমল প্রভাতালোক পড়িয় তাহার বিস্ফারিত লীলাচঞ্চল চক্ষের উপর জ্বলিল, তাহার স্কিঞ্চোজল গণ্ডে প্রভাসিত হইল। হাসি —চাহনিতে, সেই আলোতে, গোবিন্দলালের আদরে আর প্রভাতের বাতাসে-মিলিয়া গেল। এই সময়ে স্বপ্তোথিত চাকরাণী মহলে একটা গোলযোগ উপস্থিত হইল। তৎপরে ঘর ঝাটান, জল ছড়ান, বাসন মাজা, ইত্যাদির একটা সপ, সপ ছপ ছপ ঝন ঝন্‌ খন খন শব্দ হইতেছিল, অকস্মাৎ সে শব্দ বন্ধ হইয়া, “ও মা, কি হবে!” “কি সৰ্ব্বনাশ !” “কি আস্পদ্ধ৷ ” “কি সাহস !” মাঝে মাঝে হাসি টিট কারি ইত্যাদি গোলযোগ উপস্থিত হইল। শুনিয়া ভ্রমর বাহিরে আসিল । চাকরাণী সম্প্রদায় ভ্রমরকে বড় মানিত না, তাহার কতকগুলি কারণ ছিল । একে ভ্রমর ছেলে মানুষ, তাতে ভ্রমর স্বয়ং গৃহিণী নহেন, তাহার শাশুড়ী ননদ ছিল, তার পর আবার ভ্রমর নিজে হাসিতে যত পটু, শাসনে তত পটু ছিলেন না। ভ্রমরকে দেখিয়া . . চাকরাণীর দল বড় গোলযোগ বাড়াইল— নং --আর শুনেছ বেী ঠাকরুণ ? নং ২—এমন সৰ্ব্বনেশে কথা কেহ কখনও শুনে নাই । নং ৩—কি সাহস ! মাগীকে ঝাটাপেট করে আসবে এখন। নং ৪—শুধু ঝাটা—বে ঠাকরুণ—বল, আমি তার নাক কেটে নিয়ে আসি। নং ৫—কার পেটে কি আছে মা—ত। কেমন করে জানবো মা— ভ্রমর হাসিয়া বলিল, “আগে বল না কি হয়েছে, তার পর যার মনে যা থাকে করিসূ ।” তখনই আবার পূর্ববং গোলযোগ আরম্ভ হইল। নং ১ বলিল—শোন নি ! পাড়াশুদ্ধ গোলমাল হয়ে গেল যে— নং ২ বলিল—বাঘেব ঘরে ঘোগের বাসা :