পাতা:কৃষ্ণকান্তের উইল-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8Ꮤa : , কৃষ্ণকাস্তের উইল ". সেই সময়ে ভ্রমর, একটা লাঠি লইয়া, একটা বিড়াল মারিতে যাইতেছিল। বিড়াল . মারিতে, লাঠি বিড়ালকে না লাগিয়া, ভ্রমরেরই কপালে লাগিল। মালী রোহিণীর বাহুদ্বয় নামাইল। আবার উঠাইল। আবার গোবিন্দলাল ফুৎকার আবার সেইরূপ হইল। আবার সেইরণ পুন:পুন: করিতে লাগিলেন। ই তিন ঘণ্ট এইরূপ করিলেন। রোহিণীর নিশ্বাস বহিল। রোহিণী ঘঁচিল । । . . . * , . . . . . . . . . . সপ্তদশ পরিচ্ছেদ - - - রোহিণীর নিশ্বাস প্রশ্বাস বহিতে লাগিলে, গোবিন্দলাল তাহাকে ঔষধ পান করাইলেন। ঔষধ বলকারক-ক্রমে রোহিণীর বলসঞ্চার হইতে লাগিল। রোহিণী চাহিয়া দেখিল— সজ্জিত রম্য গৃহমধ্যে মন মন্দ শীতল পবন বাতায়নপথে পরিভ্রমণ করিতেছে—এক দিকে স্ফটিকাধারে স্নিগ্ধ প্রদীপ জ্বলিতেছে—আর এক দিকে হৃদয়াধারের জীবনপ্রদীপ জ্বলিতেছে । এদিকে রোহিণী, গোবিন্দলাল-হস্ত-প্রদত্ত মৃতসঞ্জীবনী সুরা পান করিয়া, মৃতসঞ্জীবিত হইতে লাগিল—আর এক দিকে র্তাহার মৃতসঞ্জীবনী কথা শ্রবণপথে পান করিয়া মৃতসঞ্জীবিত। হইতে লাগিল। প্রথমে নিশ্বাস, পরে চৈতন্ত, পরে দৃষ্টি, পরে স্মৃতি, শেষে বাক্য ফুরিত হইতে লাগিল। রোহিণী বলিল, “আমি মরিয়াছিলাম, আমাকে কে বাচাইল ?” গোবিন্দলাল বলিলেন, “যেই বঁাচাক, তুমি যে রক্ষা পাইয়াছ এই যথেষ্ট।” রোহিণী বলিল, “আমাকে কেন বঁাচাইলেন ? আপনার সঙ্গে আমার এমন কি শত্রুত যে মরণেও আপনি প্রতিবাদী ?” গো। তুমি মরিবে কেন ? রো। মরিবারও কি আমার অধিকার নাই ? গে। পাপে কাহারও অধিকার নাই। আত্মহত্যা পাপ । " রো। আমি পাপ পুণ্য জানি না—আমাকে কেহ শিখায় নাই। আমি পাপ পুণ্য মানি না—কোন পাপে আমার এই দণ্ড ? পাপ না করিয়াও যদি এই দুঃখ, তবে পাপ করিলেই বা ইহার বেশী কি হইবে ? আমি মরিব । এবার না হয়, তোমার চক্ষে পড়িয়াছিলাম বলিয়া তুমি রক্ষা করিয়াছ। ফিরে বার, যাহাতে তোমার চক্ষে না পড়ি, o, যত্ন করিব । গোবিন্দলাল বড় কাতর হইলেন ; বলিলেন, “তুমি কেন মরিবে ?”