প্রথম খণ্ড-একবিংশতিতম পরিচ্ছেদ 继姆 অধম সত্যশাসিত পুরুষ লেখক আপনাদিগের কাছে সবিস্তারে বলিয়া বাড়াবাড়ি করিতে চাহি না । . ক্রমে ভ্রমরের কাছে সংবাদ আসিতে লাগিল। প্রথমে বিনোদিনী আসিয়া বলিল, “সত্যি কি লা?” ভ্রমর, একটু শুষ্ক মুখে ভাঙ্গা ভাঙ্গ বুকে বলিল, “কি সত্য ঠাকুরৰি ?” ঠাকুরঝি তখন ফুলধনুর মত ছুইখানি ভ্র একটু জড় সড় করিয়া, অপাঙ্গে একটু বৈদ্যুতী প্রেরণ করিয়া ছেলেটিকে কোলে টানিয়া বসাইয়া, বলিল, “বলি, রোহিণীর কথাটা ?” ভ্রমর, বিনোদিনীকে কিছু না বলিতে পারিয়া, তাহার ছেলেটিকে টানিয়া লইয়া, • কোন বালিকামুলভ কৌশলে, তাহাকে কাদাইল। বিনোদিনী বালককে স্তন্যপান করাইতে করাইতে স্বস্থানে চলিয়া গেল । বিনোদিনীর পর সুরধুনী আসিয়া বলিলেন, “বলি মেজ বেী, বলি বলেছিলুম, মেজ বাবুকে অযুদ্ধ কর। তুমি হাজার হৌক গৌরবর্ণ নও, পুরুষ মানুষের মন ত কেবল কথায় পাওয়া যায় না, একটু রূপ গুণ চাই। তা ভাই, রোহিণীর কি আক্কেল, কে জানে ?” ভ্রমর বলিল, “রোহিণীর আবার অাক্কেল কি ?” *: স্বরধুনী কপালে করাঘাত করিয়া বলিল, “পোড়া কপাল। এত লোক শুনিয়াছে— কেবল তুই শুনিস্ নাই ? মেজ বাবু যে রোহিণীকে সাত হাজার টাকার গহনা দিয়াছে।” : , ভ্রমর হাড়ে হাড়ে জলিয়া মনে মনে সুরধুনীকে যমের হাতে সমর্পণ করিল। প্রকাশুে, একটা পুত্তলের মুণ্ড মোচড় দিয়া ভাঙ্গিয় মুরধুনীকে বলিল, “তা আমি জানি। খাত। দেখিয়াছি। তোর নামে চোঁদ হাজার টাকার গহনা লেখা আছে।” - বিনোদিনী মুরধুনীর পর, রামী, বামী, শ্বামী, কামিনী, রমণী, শারদ, প্রমদা, মুখদা, বরদী, কমলা, বিমলা, শীতলা, নিৰ্ম্মল, মাধু, নিধু, বিধু, তারিণী, নিস্তারিণী, দিনতারিণী, ভৰতারিণী, মুরবালা, গিরিবালা, ব্রজবালা, শৈলবালা প্রভৃতি অনেকে আসিয়া, একে একে, দুইয়ে দুইয়ে, তিনে তিনে, ছঃখিনী বিরহকাতর বালিকাকে জানাইল যে তোমার স্বামী । রোহিণীর প্রণয়াসক্ত। কেহ যুবতী, কেহ প্রৌঢ়, কেহ বৰ্ষীয়সী, কেহ বা বালিকা, সকলেই আসিয়া ভ্রমরাকে বলিল, “আশ্চৰ্য্য কি ! মেজ বাবুর রূপ দেখে কে না ভোলে? রোহিণীর রূপ দেখে তিনিই না ভুলিৰেন কেন ?" কেহ আদর করিয়া, কেহ চিড়াইয়া, কেহ রসে, কেঁহ রাগে, কেহ মুখে, কেহ ছাখে, কেহ হেসে, কেহ কেঁদে ভ্রমরকে জানাইল যে, ভ্রমর তোমার কপাল ভাঙ্গিয়াছে। - ... " গ্রামের মধ্যে ভ্রমর স্বধী ছিল। তাহার মুখ দেখিয়া সকলেই হিংসায় মরিত
পাতা:কৃষ্ণকান্তের উইল-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৫৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।