প্রথম খণ্ড—চতুৰ্ব্বিংশতিতম পরিচ্ছেদ (: ዓ বিশ্বাস। এখন তোমার উপর আমার ভক্তি নাই, বিশ্বাসও নাই । তোমার দর্শনে আমার । আর মুখ নাই। তুমি যখন বাড়ী আসিবে, আমাকে অনুগ্রহ করিয়া খবর লিখিও—আমি কাদিয়া কাটিয়া যেমন করিয়া পারি, পিত্রালয়ে যাইব ।” . গোবিন্দলাল যথাকালে সেই পত্র পাইলেন । র্তাহার মাথায় বজ্রাঘাত হইল । কেবল হস্তাক্ষরে এবং বর্ণাশুদ্ধির প্রণালী দেখিয়াই তিনি বিশ্বাস করিলেন যে, এ ভ্রমরের লেখা । তথাপি মনে অনেক বার সন্দেহ করিলেন—ভ্রমর তাহাকে এমন পত্র লিখিতে পারে, তাহা তিনি কখনও বিশ্বাস করেন নাই । সেই ডাকে আরও কয়খানি পত্র আসিয়াছিল। গোবিলালাল প্রথমেই ভ্রমরের পত্র খুলিয়াছিলেন ; পড়িয়া স্তম্ভিতের ন্যায় অনেকক্ষণ নিশ্চেষ্ট রহিলেন । তার পর সে পত্রগুলি অন্যমনে পড়িতে আরম্ভ করিলেন। তন্মধ্যে ব্রহ্মানন্দ ঘোষের একখানি পত্র পাইলেন। কবিতাপ্রিয় ব্রহ্মানন্দ লিখিতেছেন— “ভাই হে! রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়—উলু খড়ের প্রাণ যায়। তোমার উপর বেীমা সকল দৌরাত্ম্য করিতে পারেন। কিন্তু আমরা দুঃখী প্রাণী, আমাদিগের উপর এ দৌরাত্ম্য , কেন ? তিনি রাষ্ট করিয়াছেন যে, তুমি রোহিণীকে সাত হাজার টাকার অলঙ্কার দিয়াছ । আরও কত কদৰ্য্য কথা রটিয়াছে, তাহা তোমাকে লিখিতে লজ্জা করে --যাহ হৌক,— তোমার কাছে আমার নালিশ—তুমি ইহার বিহিত করিবে। নহিলে আমি এখানকার বাস উঠাইব । ইতি।” গোবিন্দলাল আবার বিস্মিত হইলেন ।—প্রমর রটাইয়াছে ? মৰ্ম্ম কিছুই না বুঝিতে পারিয়া গোবিন্দলাল সেই দিন আজ্ঞা প্রচার করিলেন যে, এখানকার জলবায়ু আমার সহ হইতেছে না।—অামি কালই বাট যাইব । নৌকা প্রস্তুত কর । পরদিন নৌকারোহণে, বিষঃমনে গোবিন্দলাল গৃহে যাত্রা করিলেন। চতুৰ্বিংশতিতম পরিচ্ছেদ যাহাকে ভালবাস, তাহাকে নয়নের আড় করিও না। যদি প্রেমবন্ধন দৃঢ় রাখিবে, তবে স্থত। ছোট করিও। বাঞ্ছিতকে চোখে চোখে রাখিও । আদর্শনে কত বিষময় ফল ফলে যাহাকে বিদায় দিবার সময়ে কত কঁাদিয়াছ, মনে করিয়াছ, বুঝি তাহাকে ছাড়িয়া দিন কাটিবে না,—কয় বৎসর পরে তাহার সহিত আবার যখন দেখা হইয়াছে, তখন কেবল Ե
পাতা:কৃষ্ণকান্তের উইল-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৬৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।