প্রথম খণ্ড—সপ্তবিংশ পরিচ্ছেদ را یارسا মুহুরি জিজ্ঞাসা করিল, “কিরূপ লিখিব ?” কৃষ্ণকান্ত বলিলেন, “যেমন আছে সব সেইরূপ, কেবল—” “কেবল কি ?” "কেবল গোবিন্দলালের নাম কাটিয়া দিয়া, তাহার স্থানে আমার ভ্রাতুপুত্রবধু ভ্রমরের নাম লেখ । ভ্রমরের অবর্তমানবস্থায় গোবিন্দলাল ঐ অৰ্দ্ধাংশ পাইবে লেখ ।” সকলে নিস্তব্ধ হইয়া রহিল । কেহ কোন কথা কহিল না। মুহুরি গোবিন্দলালের মুখপানে চাহিল। গোবিন্দলাল ইঙ্গিত করিলেন, লেখ । মুহুরি লিখিতে আরম্ভ করিল। লেখা সমাপন হইলে কৃষ্ণকান্ত স্বাক্ষর করিলেন। সাক্ষিগণ স্বাক্ষর করিল। গোবিন্দলাল আপনি উপযাচক হইয়া, উইলখানি লইয়া তাহাতে সাক্ষী স্বরূপ স্বাক্ষর করিলেন । উইলে গোবিন্দলালের এক কপদকও নাই—ত্ৰমরের অৰ্দ্ধাংশ । সেই রাত্রে হরিনাম করিতে করিতে তুলসীতলায় কৃষ্ণকান্ত পরলোক গমন করিলেন। সপ্তবিংশ পরিচ্ছেদ কৃষ্ণকান্তের মৃত্যুসংবাদে দেশের লোক ক্ষোভ করিতে লাগিল । কেহ বলিল, একট। ইন্দ্রপাত হইয়াছে, কেহ বলিল, একটা দিকপাল মরিয়াছে, কেহ বলিল, পৰ্ব্বতের চূড়া ভাঙ্গিয়াছে । কৃষ্ণকান্ত বিষয়ী লোক, কিন্তু খাটি লোক ছিলেন । এবং দরিদ্র ও ব্রাহ্মণপণ্ডিতকে যথেষ্ট দান করিতেন। সুতরাং অনেকেই তাহার জন্য কাতর হইল। সৰ্ব্বাপেক্ষ ভ্রমর। এখন কাজে কাজেই ভ্রমরকে আনিতে হইল। কৃষ্ণকাম্ভের মৃত্যুর পর দিনেই গোবিন্দলালের মাতা উদ্যোগী হইয়া পুত্রবধূকে আনিতে পাঠাইলেন। ভ্রমর আসিয়া কৃষ্ণকান্তের জন্য র্কাদিতে আরম্ভ করিল। - গোবিন্দলালের সঙ্গে ভ্রমরের প্রথম সাক্ষাতে, রোহিণীর কথা লইয়া কোন মহাপ্রলয় ঘটবার সম্ভাবনা ছিল কি না, তাহা আমরা ঠিক বলিতে পারি ন; কিন্তু কৃষ্ণকান্তের শোকে সে সকল কথা এখন চাপা পড়িয়া গেল। ভ্রমরের সঙ্গে গাবিন লালের যখন প্রথম সাক্ষাৎ হইল, তখন ভ্রমর জ্যেষ্ঠ শ্বশুরের জন্ত কঁাদিতেছে। গোবিন্দলালকে দেখিয়া আরও কাদিতে লাগিল । গোবিন্দলালও অশ্রীবর্ষণ করিলেন । o
পাতা:কৃষ্ণকান্তের উইল-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৬৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।