उिँौग्न १७–फँउँौग्न अब्रिट्ष्झम כף তাহার একেবারে লুকাইয়াছে। যে সকল সূত্রে তাঁহাদের ধরিৰার সম্ভাবনা, সকলই অবচ্ছিন্ন করিয়াছে ; পদচিহ্নমাত্র মুছিয়া ফেলিয়াছে। কিন্তু মাধবীনাথ বলিলেন যে, যদি আমি তাহদের সন্ধান করিতে না পারি, তবে বৃথায় আমার পৌরুষের শ্লাঘা করি। এইরূপ স্থির সঙ্কল্প করিয়া মাধবীনাথ একাকী রায়দিগের বাড়ী হইতে বহির্গত হইলেন । হরিদ্রাগ্রামে একটি পোষ্ট আপিস ছিল ; মাধবীনাথ বেত্ৰহস্তে, হেলিতে দুলিতে, পান চিবাইতে চিবাইতে, ধীরে ধীরে, নিরীহ ভালমানুষের মত, সেইখানে গিয়া দর্শন দিলেন । ডাকঘরে, অন্ধকার চালাঘরের মধ্যে মাসিক পনর টাকা বেতনভোগী একটি ডিপুটি পোষ্ট মাষ্টার বিরাজ করিতেছিলেন। একটি আম্রকাষ্ঠের ভগ্ন টেবিলের উপরে কতকগুলি চিঠি, চিঠির ফাইল, চিঠির খাম, একখানি খুরিতে কতকটা জিউলির আট একটি নিক্তি, ডাকঘরের মোহর ইত্যাদি লইয়া, পোষ্ট মাষ্টার ওরফে পোষ্ট বাবু গম্ভীরভাবে, পিয়ন মহাশয়ের নিকট আপন প্রভুত্ব বিস্তার করিতেছেন। ডিপুটি পোষ্ট মাষ্টার বাবু পান পনর । টাকা, পিয়ন পায় ৭ টাকা । সুতরাং পিয়ন মনে করে, সাত আনা আর পনর আনায় যে তফাৎ, বাবুর সঙ্গে আমার সঙ্গে তাহার অধিক তফাৎ নহে। কিন্তু বাবু মনে মনে জানেন যে, আমি একটা ডিপুটি-ও বেটা পিয়াদা—আমি উহার হৰ্ত্ত কৰ্ত্ত বিধাতা পুরুষ—উহাতে আমাতে জমীন আশমান ফারাক। সেই কথা সপ্রমাণ করিবার জন্য, পোষ্ট মাষ্টার বাবু সৰ্ব্বদা সে গরিবকে তর্জন গর্জন করিয়া থাকেন—সেও সাত আনার ওজনে উত্তর দিয়া থাকে। বাবু আপাততঃ চিঠি ওজন করিতেছিলেন, এবং পিয়াদাকে সঙ্গে সঙ্গে আশী আনার ওজনে ভৎসনা করিতেছিলেন, এমত সময়ে প্রশান্তমূৰ্ত্তি সহাস্তবদন মাধবীনাথ বাবু সেখানে আসিয়া উপস্থিত হইলেন। ভদ্রলোক দেখিয়া, পোষ্ট মাষ্টার বাবু আপাততঃ পিয়াদার সঙ্গে কচকচি বন্ধ করিয়া, হা করিয়া, চাহিয়া রছিলেন। ভদ্রলোককে সমাদর করিতে হয়, এমন কতকটা তাহার মনে উদয় হইল—কিন্তু সমাদর কি প্রকারে করিতে হয়, তাহাৰ্তাহার শিক্ষার মধ্যে নহে—সুতরাং তাহা ঘটিয়া উঠিল না। মাধবীনাথ দেখিলেন, একটা বানর। সহাস্যবদনে বলিলেন, “ব্রাহ্মণ ?” । পোষ্ট মাষ্টার বলিলেন, “স্থা—তু—তুমি—আপনি ?” মাধধীনাথ ঈষৎ হাস্য সংবরণ করিয়া অবনতশিরে যুক্তকরে ললাট স্পর্শ করিয়া বলিলেন, “প্রাতঃপ্রণাম ।” । - - তখন পোষ্ট মাষ্টার বাবু বলিলেন, “বলুন।" .
পাতা:কৃষ্ণকান্তের উইল-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৮৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।