পাতা:কৃষ্ণকান্তের উইল-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বিতীয় খণ্ড—যষ্ঠ পরিচ্ছেদ bra সোণা। কি নাম বলিব ? : . নিশা। নামের প্রয়োজনই বা কি ? একটি ভদ্রলোক বলিয়া বলিও। ', , এখন, চাকরের জানিত যে, কোন ভদ্রলোকের সঙ্গে বাবু সাক্ষাৎ করেন না—সেরূপ । স্বভাবই নয়। সুতরাং চাকরের সংবাদ দিতে বড় ইচ্ছুক ছিল না। সোণা ইতস্তত: করিতে লাগিল। রূপে বলিল, “আপনি অনর্থক আসিয়াছেন—বাবু কাহারও সহিত সাক্ষাৎ করেন না।” . নিশা। তবে তোমরা থাক—আমি বিনা সংবাদেই উপরে যাইতেছি । চাকরেরা ফাপরে পড়িল। বলিল, “না মহাশয়, আমাদের চাকরী যাবে।” । নিশাকর তখন একটি টাকা বাহির করিয়া বলিলেন, “যে সংবাদ করিবে, তাহার এই টাকা ।” - সোণা ভাবিতে লাগিল—রপো চিলের মত ছে। মারিয়া নিশাকরের হাত হইতে টাকা লইয়া উপরে সংবাদ দিতে গেল । গৃহটি বেষ্টন করিয়া যে পুষ্পোদ্যান আছে, তাহা অতি মনোরম। নিশাকর সোণাকে বলিলেন, “আমি এ ফুলবাগানে বেড়াইতেছি—আপত্তি করিও না—যখন সংবাদ আসিবে, তখন আমাকে ঐখান হইতে ডাকিয়া আনিও ।” এই বলিয়া নিশােকর সোণার হাতে আর একটি টাকা দিলেন। - রূপে যখন বাবুর কাছে গেল, তখন বাবু কোন কাৰ্য্যবশতঃ অনবসর ছিলেন, ভৃত্য তাহাকে নিশাকরের সংবাদ কিছুই বলিতে পারিল না। এ দিকে উদ্যান ভ্রমণ করিতে করিতে নিশাকর একবার উদ্ধদৃষ্টি করিয়া দেখিলেন, ... ক পরম সুন্দরী জানেলায় দাড়াইয়৷ তাহাকে দেখিতেছে । রোহিণী নিশাকরকে দেখিয়া ভাবিতেছিল, “এ কে ? দেখিয়াই বোধ হইতেছে যে, এ দেশের লোক নয়। বেশভূষা রকম সকম দেখিয়া বোঝা যাইতেছে যে, বড় মানুষ বটে। দেখিতেও স্বপুরুষ–গোবিন্দলালের চেয়ে ? না, তা নয়। গোবিন্দলালের রঙ ফরশা— কিন্তু এর মুখ চোখ ভাল। বিশেষ চোখ-আ মরি! কি চোখ ! এ কোথা থেকে এলো ? হলুদগায়ের লোক ত নয়—সেখানকার সবাইকে চিনি। ওর সঙ্গে দুটো কথা কইতে পাই না ? " ক্ষতি কি —আমি ত কখনও গোবিন্দলালের কাছে বিশ্বাসঘাতিনী হইব না।” রোহিণী এইরূপ ভাবিতেছিল, এমত সময়ে নিশাকর উন্নতমুখে উদ্ধদৃষ্টি করতে চারি চক্ষু সন্মিলিত হইল। চক্ষে চক্ষে কোন কথাবাৰ্ত্ত হইল কি না, তাহ আমরা জানি না—