পাতা:কৃষ্ণকান্তের উইল-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৯২ x.’ কৃষ্ণকাস্তুের উইল রূপো । আজ্ঞে তা নয়—একটা নিরিবিলি কথা আছে। একটু নিরিবিলিতে আসুন। রূপে নিশাকরকে সঙ্গে করিয়া আপনার নির্জন ঘরে লইয়া গেল। নিশাকরও বিনা ওজর আপত্তিতে গেলেন। সেখানে নিশাকরকে বসিতে দিয়া, যাহা যাহা রোহিণী বলিয়াছিল, রূপচাদ তাহ বলিল । r নিশাকর আকাশের চাদ হাত বাড়াইয়া পাইলেন । নিজ অভিপ্রায় সিদ্ধির অতি সহজ উপায় দেখিতে পাইলেন। বলিলেন, “বাপু, তোমার মুনিব ত আমায় তাড়িয়ে দিয়াছেন, আমি তার বাড়ীতে লুকাইয়া থাকি কি প্রকারে ?” রূপো । আজ্ঞে তিনি কিছু জানিতে পারিবেন না। এ ঘরে তিনি কখনও আসেন না । - নিশা। না আস্থন, কিন্তু যখন তোমার মা ঠাকুরাণী নীচে আসিবেন, তখন যদি তোমার বাবু ভাবেন, কোথায় গেল দেখি ? যদি তাই ভাবিয়া পিছু পিছু আসেন, কি কোন রকমে যদি আমার কাছে তোমার মা ঠাকুরাণীকে দেখেন, তবে আমার দশটা কি হবে বল দেখি ? - রূপচাদ চুপ করিয়া রহিল। নিশাকর বলিতে লাগিলেন, "এই মাঠের মাঝখানে, ঘরে পুরিয়া আমাকে খুন করিয়া এই বাগানে পুতিয়া রাখিলেও আমার মা বলতে নাই, বাপ বলতেও নাই। তখন তুমিই আমাকে স্থা ঘা লাঠি মারিবে।—অতএব এমন কাজে আমি নই। তোমার মাকে বুঝাইয়া বলিও যে আমি ইহা পারিব না। আর একটি কথা বলিও। তাহার খুড়া আমাকে কতকগুলি অতি ভারি কথা বলিতে বলিয়৷ দিয়াছিল । আমি তোমার মা ঠাকুরাণীকে সে কথা বলিবার জন্য বড়ই ব্যস্ত ছিলাম। কিন্তু তোমার বাবু আমাকে তাড়াইয়। দিলেন। আমার বলা হইল না, আমি চলিলাম।” | রূপে দেখিল, পাচ টাকা হাতছাড়া হয়। বলিল, "আচ্ছ, তা এখানে না বসেন, বাহিরে একটু তফাতে বসিতে পারেন না ?” • নিশা। আমিও সেই কথা ভাবিতেছিলাম। আসিবার সময় তোমাদের কুঠির নিকটেই নদীর ধারে, একটা বাধা ঘাট, তাহার কাছে দুইটা বকুল গাছ দেখিয়া আসিয়াছি। চেন সে জায়গা ? - রূপো । চিনি । নিশা। আমি গিয়া সেইখানে বসিয়া থাকি। সন্ধ্য। হইয়াছে—রাত্রি হইলে, সেখানে বসিয়া থাকিলে বড় কেহ দেখিতে পাইবে না। তোমার মা ঠাকুরাণী যদি সেইখানে / y