পাতা:কোর্‌-আন্‌ শরীফ-ভাই গিরিশ চন্দ্র সেন.djvu/১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

________________

॥00 তদ্বিষয়ে যথোচিত যত্ন করা হইয়াছে। তদনুরােধে বঙ্গভাষার লালিত্যরক্ষার প্রতি সবিশেষ দৃষ্টি রাখতে পারা যায় নাই। কিন্তু আরব্যভাষার প্রণালী বঙ্গীয় ভাষার প্রণালীর সম্পূর্ণ বিপরীত। বাঙ্গলা বাম দিক হইতে লিখিত হইয়া থাকে, আরবী ঠিক তাহার বিপরীত দক্ষিণ দিক হইতে লিখিত হয়। বচনবিন্যাসপ্রণালীও সেইরূপ। সাধারণতঃ কর্তৃপদ পূর্বে স্থাপিত ও সমাপিকা ক্রিয়া অন্তে সংযুক্ত হইয়া বাঙ্গলা ভাষার বাক্য সমাপ্ত হইয়া থাকে । কিন্তু প্রায়শঃ আরব্য বাক্যের আরম্ভে সমাপিকা ক্রিয়ার ও অন্তে কর্তৃপদের প্রয়ােগ হয়। অনেক স্থলে বঙ্গভাষার কর্তৃকারক ব্যক্ত ও ক্রিয়াপদ উহ্য থাকে, আরব্যভাষায় তাহার বিপরীত; অর্থাৎ কর্তৃকারক অব্যক্ত, ক্রিয়াপদ ব্যক্ত হইয়া থাকে; ক্রিয়াপদের পুরুস, লিঙ্গ ও বচনের চিহ্ন দ্বারা কর্তা নির্ণয় করিতে হয়। অল্প কথায় বিস্তৃত ভাব ব্যক্ত করিতে আরব্য ভাষা যেরূপ অনুকূল, এমন পূর্ণ ভাষা যে সংস্কৃত, তদ্বিষয়ে অনেক স্থলে পরাস্ত। আরবীয় একটী কথার ভাব ব্যক্ত করিতে বাঙ্গলা ভাষায় প্রায় তাহার দ্বিগুণ ত্রিগুণ কথা প্রযােগ কবিতে হয়। এই উভয় ভাষার পদবিন্যাসপ্রণালী ইত্যাদির বহু বিভিন্নতাহেতু কোরআনের প্রবচন সকল আরব্য ভাষার রীতি অনুসারে বাঙ্গলা ভাষায় আক্ষরিক অনুবাদ করিতে গেলে তাহা নিতান্ত শ্রুতিকটু ও দুর্বোধ হইয়া উঠে; অতএব আমাকে অনুবাদে বঙ্গভাষার বচনবিন্যাসপ্রণালীর অনুসরণ করিতে হইয়াছে। বিশদরূপে ভাব প্রকাশ করিবার জন্য যে যে স্থানে দুই একটা অতিরিক্ত শব্দের প্রয়োগ করা হইয়াছে, তাহা () এই চিহ্নের মধ্যে ব্যবস্থাপিত করা গিয়াছে। দুরূহ বাক্যের টীকা ও ঐতিহাসিক তত্ত্ব সকল প্রায়ই কোরআনের পারস্য ভাষা পুস্তক “তফসির হােসেনী” এবং “শাহ, অবদোকাদেরের” উর্দুভাষ্য অবলম্বন করিয়া লিখিত হইয়াছে। আমি কোরআনে উক্ত বাক্যের অর্থবােধ ও অনুবাদে এই দুই ভায় হইতে অনেক সাহায্য পাইয়াছি। | কোর-আন শব্দের অর্থ পাঠ,-কোরআনের অপর নাম “কলামাল্লাহ” (ঈশ্বরবাণী)। সময়ে সময়ে মহাপুরুষ মােহম্মদ জগতের কল্যাণার্থ প্রচার করিতে যে সকল প্রত্যাদেশ লাভ করিয়াছিলেন, তাহাই পুস্তকে একত্র সম্বদ্ধ হইয়া কো-আন্ নাম প্রাপ্ত হইয়াছে। মােসলমানেরা ঈশ্বরের বাক্য বলিয়া কোর-আনকে অত্যন্ত সম্মান করেন। কোর-আন্ অধ্যয়ন ও শ্রবণে বহু পুণ্য লিখিত আছে। সমুদায় মােসলমান কো-আনের মতানুসারে চলিতে বাধ্য। কোরআনকে কোনরূপ অতিক্রম করিলে মহাপাতকী হইতে হয়। কোৰআন্ পাঠকালে পাঠকের নিম্নলিখিত নীতি সকল পালন করা বিধেয়। যথা—দন্তধাবন, ওজু (বিশেষ নিয়মানুসারে হস্তপদমুখাদি