করুণাময় কৃপানিধান আল্লার নামে
কোর্-আন্ আল্লার শাশ্বতবাণী, বিশ্বমানবের কল্যাণ ও মুক্তি সাধনের একমাত্র উদ্দেশ্যে, সর্ব্বজগৎস্বামী আল্লার পক্ষ হইতে বিশ্বনবী হজরত মোহাম্মাদ মোস্তাফার নিকট প্রকাশিত—ইহা কোর্-আনের নিজের দাবী এবং মুছলমান সমাজের সমবেত বিশ্বাস।
দীর্ঘকাল যোগযুক্ত অবস্থায় অতিবাহন করার পর, হজরত মোহাম্মাদ প্রথম “অহি” বা ভাববাণী লাভ করেন, ৪১ বৎসর বয়সের প্রথম ভাগে। সেই হইতে তাহার জীবনের শেষভাগ পর্য্যন্ত, দীর্ঘ ২৩ বৎসর ব্যাপিয়া কোর্-আনের ক্ষুদ্র বৃহৎ এক একটা অংশ তাহার নিকট প্রকাশিত হইতে থাকে। হজরত মোহাম্মাদের সহচরগণের মধ্যে কয়েকজন লোক “কাতেবুল্-অহয়” বা ভাববাণীর লেখক বলিয়া আখ্যাত হইতেন। র্তাহার নিকট কোন ভাববাণী প্রকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাহা লিপিবদ্ধ করিয়া রাখাই ইহাদের কর্ত্তব্য ছিল। এইরূপে লিখিত কোর্-আনের অংশগুলি, স্বয়ং হজরতের তত্ত্বাবধানে ও তাঁহারই বাসস্থানে একটা সিন্দুকের মধ্যে সংরক্ষিত হইত। ইহা ব্যতীত হজরতের সহচরবর্গ মিজেদের ব্যবহারের জন্তও কোরআনের আয়ৎ ও ছূরাগুলি লিখিয় রাথিতেন। এইরূপে সমস্ত কোর্-আন্, হজরত মোহাম্মাদের আদেশ ও নির্দ্দেশ মতে এবং তাঁহার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে সম্পূর্ণরূপে লিপিবদ্ধ হইয়া যায়। ইহা ব্যতীত হজরতের বহু সহচরও কোর্-আনের ক্ষুদ্র বৃহৎ বিভিন্ন অংশ লিপিবদ্ধ করিয়া রাখিয়াছিলেন।
মুছলমান সমাজে “হাফেজ” বলিয়া এক শ্রেণীর লোক আছেন, অমুছলমান পাঠকগণও ইহা লক্ষ্য করিয়া থাকিবেন। কোর্-আনের সম্পূর্ণ ত্রিশখণ্ড ইহারা কণ্ঠস্থ করিয়া রাখেন বলিয় ইহাঁদিগকে হাফেজ বা স্মৃতিধর উপাধি দেওয়া হয়। কোর্-আন অতি যত্নে ও সম্পূর্ণ বিশুদ্ধভাবে কণ্ঠস্থ করিয়া রাখার এই প্রথা হজরত মোহাম্মাদের সময় হইতে আজ পর্য্যস্ত অব্যাহতভাবে চলিয়া আসিয়াছে। স্বয়ং হজরত ও তাঁহার বহুসংখ্যক ছাহাবা (সহচর) সম্পূর্ণ কোর্-আন্ কে কণ্ঠস্থ করিয়া রাখিয়াছিলেন। তাহার পর প্রত্যেক যুগে ও প্রত্যেক দেশে হাফেজদিগের সংখ্যা ক্রমশ: বাড়িয়া যাইতে থাকে এবং বর্তমান সময় এইরূপ হাফেজের সংখ্যা এক লক্ষের কম হইবে না বলিয়া অনুমান করা হয়। ইহা ব্যতীত নামাজের প্রত্যেক রেক্আতে কোর্-আনের কতক অংশের আবৃত্তি করিতে হয়। এজন্যও প্রত্যেক ধর্ম্মপ্রাণ মুছলমান কোর্-আনের অস্তুত: কএকটা ছূরা কণ্ঠস্থ করিয়া রাখিতে বাধ্য হন। ফলতঃ হজরত