থাকতে দেননি! নিজে অফলা হবার আক্রোশে ওদের ফলবন্ত মূর্ত্তি হয়ত তাঁর অপ্রকৃতিস্থ চিত্তকে ঈর্ষান্বিত করে তুলেছিল, নয় কি? একেই বলে “স্ত্রীয়শ্চরিত্রম্”—সেই সঙ্গেই মনে হলো, “পুরুষস্য ভাগ্যং”ও যে দেবতার অদৃশ্য প্রবাদবাণী এ-ও কিছুমাত্র বেঠিক নয়। এরও উদাহরণ আমাদের এই সর্ব্বসুখের অধিকারী হয়েও একান্ত দুর্ভাগ্য দিব্যেন্দু।—যাক্ ভাগ্যিস বিয়ে করিনি, খুব বেঁচে গেছি বহু ঝামেলা থেকে। মেয়েদের নিয়ে ঘর করা আর আগুন নিয়ে খেলা, ও দেখছি একই কথা।
পাঁচ
“স্ত্রীয়শ্চরিত্র” যে কি বস্তু তখনও তা ভাল করে জানতে পারিনি। সেটার একটা উদাহরণ পেলেম ঠিক এর পরের রাত্রে। ফুটফুটে জ্যোৎস্নায় চাঁদের উপর একখানা হিম-কুয়াসার পাতলা চাদরের আচ্ছাদন পড়া সত্ত্বেও বাগানে আলোর অপ্রতুলতা হয়নি। আমার শোবার ঘরটা ছিল ঠিক পিছন দিকের সারিতে, ঐ দিকে কেয়াবন, ঝুমকোলতা এবং কলকে ফুলের কুঞ্জগুলো বেশ সুস্পষ্টই দেখা যাচ্ছিল। খোলা জানলার সামনে এসে দাঁড়াতেই নীচের দিক থেকে মানুষের গলার সাড়া পেলেম। রাত তখন পৌনে দুটো। জল খেয়ে ঘড়ি দেখে ফের শুতে যাচ্ছিলাম, জ্যোস্নাস্নাত উদ্যানের রূপ যেন আমাকে টেনে রাখলে। কানে ভেসে এলো একান্ত অপ্রত্যাশিত শব্দটা:
“তুমি কি বোঝ না এমন করে তোমায় এ বাড়ীতে ঢুকতে দেওয়া আমার পক্ষে কত বড় সাঙ্ঘাতিক? কেন তুমি আস? আরও কি তুমি করতে চাও?”
সমস্ত শরীর মন শিউরে উঠে যেন এতটুকু হয়ে গেল! এ’ কি!