আর কিছুই হতে পারে না। ভেবে পাইনি কি করে কোথা থেকে ভেতো-বাঙ্গালী হয়ে আমার রক্তে এ খুনের জোয়ার বয়ে আসে! আমার এ রক্তে খুনের এ আগুন জ্বলে কোথা থেকে,—ভাঁটাপড়া পচা পুকুরের শ্যাওলা-পড়া পাঁকের বদলে! যাক বেঁচে গেছি। তোমার স্বামী, যদি সন্তান জন্মাতে সময় মেলে তো তারা, এবং অবশেষে তুমি হাজরা-বংশের ঝাড়ে-বংশে সক্কলেই আজ থেকে আমার পিতৃহত্যার পরিশোধে আমার ভিকটিম হয়ে খোদাতালার পায়ে উৎসর্গিত হয়ে রইলে। প্রতিশোধ—পিতৃহত্যার নির্ম্মম প্রতিশোধ!”
সূর্য্যকান্ত দম্ভভরে জুতা ঠুকে চলতে উদ্যত হয়ে মুখ ফিরালো।
এক মুহূর্ত্তে আমার চোখের সামনের সারা দুনিয়াটাই বিপুল বেগে ঘূর্ণিত হয়ে উঠলো। পায়ের তলায় পৃথিবী যেন ভীষণ ভূমিকম্পে প্রচণ্ড দুলে উঠল। উঃ, সর্ব্বনাশী আমি এ’কি করলেম? হা ঈশ্বর! এ কি মতিচ্ছন্ন ধরলো আমার? আকুল আর্ত্তনাদ করে ছুটে এলাম,—“দাদা! দাদা!—ক্ষমা করো, বুদ্ধিহীনা নারী আমি, আমার সর্ব্বস্ব তোমায় দান করছি, তুমি সব নাও—সব নাও—আরও যা চাও তাও দোব। ক্ষমা ক্ষমা—”
কে কোথায়?
অদূর হতে একটা হিংস্র তীব্র বৈশাখী ঝড়ের ঝাপটার মত রুদ্র জ্বালাময় বিদ্রূপ হাস্য ছুটে এসে আমার সর্ব্বশরীরে ও ভয়ার্ত্ত-চিত্তে অগ্নিবাণের মতই ঝাঁপিয়ে পড়লো, আমি সংজ্ঞাহারা হলাম।
“ডাক্তার! ডাক্তার! অবিলম্বে তোমার অ্যানটি-হেমলক বার করো, শীগ্গির—শীগ্গির—শীগ্গির—”
আকস্মিক সেই তথাকথিত অগ্নিবাণেরই একটা সুতীক্ষ্ণ শব্দশরের ফলা এসে তীব্রবেগে কানের মধ্যে বিঁধল। এই রহস্যঘন