পাতা:ক্রৌঞ্চ-মিথুনের মিলন-সেতু - অনুরূপা দেবী.pdf/১৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ক্রোঞ্চ-মিথুনের মিলন-সেতু
১২২

জীবন-কাহিনীর অদ্ভুত পরিবেশে মাথা কি আমার বিগড়িয়ে গেল নাকি? অথবা আমার অবচেতন মনের গুহায় রক্ষিত সেই পুরাতন দৃশ্যপট—

 “ডাক্তার! এক মিনিট সময় নষ্ট করবার অবসর আর নেই। হয় আমায় বাঁচাও, নয় নিজে মর!”

 একহাতে রিভলবার বাগানো, অপর হাতটা আর্ত্তভাবে নাড়া দিতে দিতে স্খলিত-কণ্ঠে সেই আমার হেমলক প্রতিষেধকের প্রথম রোগী আমার সম্মুখীন হয়ে দাঁড়িয়েছে। দাঁড়িয়েছে কিন্তু এক লহমার দৃষ্টিতেই বুঝলাম, দাঁড়িয়ে থাকবার শক্তি তার আর তখন শরীরে অবশিষ্ট ছিল না, বেতসপত্রের মতই সুদীর্ঘ দেহটা সঘনে কম্পিত হচ্ছিল।

 একটা দারুণ আতঙ্কে আমার হৃৎপিণ্ড নিশ্চল হয়ে পড়ে রইল, গভীর বিস্ময়ের তাড়না থেকে কোনক্রমে আত্মরক্ষা করে সাশ্চর্য্যে বলে উঠলেম, “এ কি! তুমি এই নিশ্ছিদ্র বন্ধ বাড়ীতে কি করে ঢুকলে?”

 ঘোর অমঙ্গল-ভরা বিদ্রূপপূর্ণ উচ্চ হাস্যধ্বনি উত্থিত হয়ে মধ্য পথেই যেন সহসা থেমে গেল। “নির্ব্বোধ! এ বাড়ীর প্রত্যেকটি রুদ্ধ দ্বার আমার গতি যদি রোধ করতে পারতো তা’হলে এত কাণ্ড করলাম কি করে? নীল গুদামের ভাঙ্গা বাড়ী দিয়ে এ বাড়ীর কর্ত্তার ঘর পর্য্যন্ত যে গুপ্তপথ আছে, তার খবর রাখো সার্লকহোম্‌স্? কেয়াতলার জমিতে তার একটা গুপ্ত দরজা আর ঐ—ঐ ঘরের পাশের করাইডরে দ্বিতীয় আর একটা। কিন্তু, করছো কি? ভেবেছ কি আমি যদি মরি তোমায় ছেড়ে রেখে যাবো? না, না, না,—”

 সূর্য্যকান্ত নলটা আমার ললাট লক্ষ্যে তুলে ধরল।

 “দেখছে না নিজের বিষে নিজেই জ্বরে’ যাচ্ছি! গোখরো সাপ