পাতা:ক্রৌঞ্চ-মিথুনের মিলন-সেতু - অনুরূপা দেবী.pdf/২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৯
ক্রৌঞ্চ-মিথুনের মিলন-সেতু

থাকে তোমার সেই মিডিয়াম? নিয়ে চলো আমাকে সেইখানে, এক্ষুণি নিয়ে চল, না গেলে ওই ডাণ্ডা দিয়ে মাথাটি ফাটিয়ে দোব।”

 সুনীতির মুখখানা মরামুখের মত সাদা হইয়া গিয়াছে, সে তার কম্পিত ওষ্ঠাধরে কি যেন বলিতে গেল, কিন্তু বলা আর তা’ হইল না, হাতের ইঙ্গিতে উহাকে থামাইয়া দিয়া আগন্তুক সপ্রতিভ স্নিগ্ধ হাস্যে উত্তর দিল, “আপনাকে সেখানে কোন্ দুঃখে নিয়ে যাবো, তাঁকেই এখানে আজ রাত্রে আমি আনছি যে। এইখানে, এই তাঁর নিজস্ব বাড়ীঘরে, এইখানে এসেই না তাঁর মনটা পরিতৃপ্ত হবে। তা ছাড়া দেখুন, আপনি অত ভিড়ের মধ্যে ডাকতেন বলেই না তিনি ডাকলেও আসবেন না বলেছিলেন। নিজে যেচে এসে ওঁকে বল্লেন—“দেখুন, আমি হিঁদুঘরের বউ মানুষ, যতই হোক, সায়েবটায়েবের হাত-ধরা কি আর আমি পছন্দ করতে পারি!” এ রকম কেস্ ওঁর কাছে বিস্তর এসেছে কি না,—ওঁরই কাছে আমার সে-সব কাহিনী তো শোনা। তাই বলছি, দেখছেন তো, ঠিক হুবহু তাই এক্ষেত্রেও ঘটেছে, কথায় বলে, ‘স্বভাব যায় না মলে’। আচ্ছা, সুনীতি দেবি! দিন না ওঁর চা-টা ওঁকে এগিয়ে, আর যদি বেশী থাকে তো আমাকেও এক, না হয় তো আধ পেয়ালাটাক্—অবশ্য নিজের জন্যেও একটুখানি রাখবেন; না, না, সমস্তটা আমায় ঢেলে দিচ্ছেন কেন? আছে আরও? কই ঢালুন তো দেখি, আচ্ছা— তাহলে বিস্কুট দুটো চন্দ্রবাবু, না কি বলবো? জ্যাঠামশাই বলি? হ্যাঁ—খেয়ে নিন, আর বেশ করে তেলটি মেখে স্নান আহার করে একটুখানি নিদ্রা দিয়ে নেবেন, বৈকালে চা ইত্যাদি খেয়ে সম্পূর্ণরূপে তৈরী থাকবেন, সন্ধ্যে হলেই ওঁকে আমি সঙ্গে করে নিয়ে আসবো। আর আপনি সুনীতি দেবি! একটা কাজ করবেন, একটি নির্জ্জন দেখে ঘর গঙ্গাজলে ধুয়ে মুছে ধূপ জ্বেলে, ফুল সাজিয়ে চন্দনের ছড়া