“কি বলবে বলতো সুকু! তুমি কি আমায় যা’ তা কথাই বলবে? সে কি আমি জানি না? ভুলে গেছি তোমার চরিত্র?”
চন্দ্রকুমারের বহুদিন হাস্যাভাষ-বিস্মৃত ওষ্ঠাধারে গভীর নির্ভর প্রেমের স্নিগ্ধ-হস্তরেখা বিভাষিত হইয়া উঠিল।
“এই ডক্টর প্রফুল্লকান্তি গাঙ্গুলীর সঙ্গে সুনীতির বিয়ে দিলে তাঁর দীক্ষাগুরু হিসাবে স্বামীজি অপ্রকাশানন্দ তোমার আমার মধ্যে মাসে একটি দিন করে এমনি একটি মিলন-সেতু রচনা করতে নীতির অনুরোধে হয়ত সম্মত হলেও হতে পারেন, এই কথাই আমি বলতে চাইছিলাম। এই আর কি!”
সুনীতির বুকের মধ্যে দড়াম্ করিয়া ধাক্কা দিয়া একটা যেন অবরুদ্ধ দ্বার খুলিয়া গেল। ডক্টর প্রফুল্ল গাঙ্গুলী পুনা মেণ্টাল হসপিটালের জার্ম্মাণী পাশ-করা বড় ডাক্তার। প্রফুল্ল গাঙ্গুলী তার সহপাঠিনী একমাত্র অন্তরঙ্গ-প্রিয়সখী স্বাহা, যাকে সে তার জীবনের প্রত্যেকটি ঘটনা জানাইতে কোনদিন দ্বিধামাত্র বোধ করে নাই এবং সে তাদের পারিবারিক সমস্ত কথাগুলোই এবং সাইকীক্-রিসার্চ্চ-সোসাইটির লিখিত পত্রাবলী সমুদয়ই খুঁটিয়া খুঁটিয়া শুধু জানাই নয়, স্বচক্ষে পড়িয়াও দেখিয়াছে,— তাহারই সহোদর ভাই এই ডক্টর গাঙ্গুলী,—তবে কি, তবে কি—
সাগ্রহে চন্দ্রকুমার প্রশ্ন করিলেন, “তাঁকে কোথায় পাবো রে সুকু?” সুকুমারী সম্ভবতঃ যথেষ্ট উপহাসের হাসিই তাঁদের অলক্ষ্যে হাসিয়া থাকিবেন, তবে সে হাসি দর্শন করিবার মত পুণ্যবল তো পিতা-পুত্রীর ছিল না, তাই সেটা হয়ত একা স্বামীজীই উপভোগ করিলেন।
“ইনিই তো সেই ডাক্তার গাঙ্গুলী, যিনি স্বামীজীকে আজ এখানে নিয়ে এসেছেন। নৈলে আর আনলে কে? মস্তবড় ডাক্তার