পাতা:ক্রৌঞ্চ-মিথুনের মিলন-সেতু - অনুরূপা দেবী.pdf/৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৩
হেমলক

করলাে, দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে পৃথিবীজোড়া সবচেয়ে বড় যুদ্ধের বীজ পোঁতা হলাে; কিন্তু মানুষ বড়জোর অদূর ভবিষ্যৎই দেখতে পায়, সে তাে সর্ব্বদর্শী নয়, ঐ লোহাই যে আবার সোনার চাইতেও বড় হয়ে উঠবে তখন সেকথা কেউ কি জানতো।

 দিব্যেন্দু ইছামতীর তীরে বিশাল জমিদারী কিনে সবচেয়ে আধুনিক ফ্যাসানে বাড়ী তৈরী করিয়ে সমস্ত নাগরিক সভ্যতার বাইরে গিয়ে বাস করছে, বিয়ে সে আগেই করেছিল,—এই পর্য্যন্ত খবর তার চিঠিপত্রে পেয়েছিলাম। বিয়ের সময় অবসর করে সেখানে যাবার জন্যেও সে আমায় একটা চিঠি মারফৎ আমন্ত্রণ করেছিল। তার পর থেকে বছর দুই তাদের কোন খবরাখবর পাইনি; বলা বাহুল্য, আমারও খবর নেবার অবসর তখন একেবারেই ছিল না। নতুন একটা তীব্রতম বিষ-প্রতিষেধক ঔষধ আবিষ্কার করে—আমি তখন তাই নিয়ে একটা সাধনায় মগ্ন হয়ে ছিলাম।

 আমার সাধনা সফল হয়েছে। শুধু সাপের বিষই নয়,—সময়ে প্রয়ােগ করতে পারলে আর্সেনিক এমন কি পটাসিয়াম সায়নাইডের প্রচণ্ড বিষক্রিয়াকে পর্য্যন্তও পরাভব করে ফেলতে সমর্থ।

 অভাবনীয় রূপেই এতবড় মহৌষধ আমার হাত দিয়ে ভগবান মানব সমাজকে দান করলেন। সেও এক উপকথার কাহিনীর মতই চমকপ্রদ অদ্ভুত ব্যাপার। আচ্ছা, দিব্যেন্দু এখন একটু সরেই দাঁড়াক না, সেই কথাটাই আগে বলি, এই দুটো ব্যাপার তাে পরস্পরের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন নয়; সেই কাহিনীটা আগে থেকে এখানে বলে রাখা ভাল। সে একটা বসন্তকালের সন্ধ্যা। কলকাতায় থাকি, সেখানে অবশ্য শীত-বসন্তের কোন মূর্ত্ত পরিচয় আমরা পাইনে; ওসব ঋতুগুলি আমাদের কাছে প্রায় অবান্তর এবং অনাবশ্যক। অতি ঘনিষ্ঠতর পরিচয় ও কারবার আমাদের যা