আর নয়! সুখের দিনের সাদর নিমন্ত্রণ তার আমি নিইনি কিন্তু এতবড় দুঃখের দিনের প্রচ্ছন্ন প্রত্যাশা থেকে তাকে বঞ্চিত করতে পারলাম না। এখানকার ব্যবস্থা এক রকম করে দিয়ে ওদের কাছে রওয়ানা হলেম।
তিন
মানুষের কপালে সুখ নেই, এ কথাটা শাস্ত্রকারদের আমি মানি অন্তরের সঙ্গেই। যদি বা কোন সন্দেহ থেকে থাকে দিব্যেন্দুর বাড়ী পৌঁছে সেটুকুও দূর হলো। সে কি একটা বাড়ী! যেন একজন স্বাধীন রাজার রাজপ্রাসাদ। কতখানি জমি নিয়ে চৌরস করে তার চারদিকে চার-মানুষ ভোর বিরাট পাঁচিল-ঘেরা। পাঁচিলের মাথায় লোহার সূক্ষ্মাগ্র ফলকের বেষ্টনী, চোরের বাবারাও একে টপকে আসতে পারবে না। সামনে মস্তবড় গম্বুজওয়ালা তোরণ। দুদিকে একটি করে দরোয়ানের ঘর। দু’জন করে গুর্খা সিপাই রাত্রি-দিন বন্দুক-ঘাড়ে পাহারা দিচ্চে, কোমরের চওড়া চামড়ার বেল্টে যথারীতি চামড়ার কেসে তাদের জাতি-বাচক তীক্ষ্ণধার শাণিত কুকরী আছেই।
ষ্টেশন থেকে নেমে স্থলপথে যাবার সুবিধা নেই, ওদের প্রমোদতরণী বা ক্ষুদ্র মোটর-বোট “ইলাবরর্ত্ত” আমার জন্য নদীর ওপর প্রতীক্ষা করছিল। নদী? না নদী ঠিক নয়। সেটা নাকি নদী থেকে পাঁচ সাত মাইল উপরের দিকে বেরিয়ে আসা নদীর একটা খাঁড়ি। তাহলেও জলের তাতে কখনও অভাব হয়নি, অথৈ জলে গ্রীষ্মবর্ষা টলমল করছে। দুধারে বন-করম্চা থোকা থোকা হয়ে ফলে আছে, কতকগুলো লাল, কতকগুলো গোলাপী। কদমফুল, কামরাঙ্গা, পালতে-মাদার আরও কত কি চেনা-অচেনা গাছ ফলেফুলে তাদের আরণ্যক বাগান সাজিয়েছে। বাড়ীর চারদিক বেড়ে