পাতা:খুন না চুরি? - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩২
দারোগার দপ্তর, ১৯৩ সংখ্যা।

ছিলেন বলিয়াই সে যাত্রা অব্যাহিত পাই। এইরূপে নানা কারণে মনে কেমন বৈরাগ্য উপস্থিত হইল, আমি সংসার ছাড়িয়া গুরুর নিকট যাইলাম। সেখানে দীক্ষা লইয়া সেই নির্জ্জন বনে সাধনা করিতে থাকি। কিছুদিন হইল, এই দুইজনের ইচ্ছায় আমাকে এখানে আসিতে হইয়াছে। কিন্তু এখানেও নিস্তার নাই—শোভন সিং আমাকে প্রাণে মারিবার চেষ্টা করিতেছে। কিন্তু তাহাতে সন্ন্যাসীর কি করিবে?

 এই বলিয়া সন্ন্যাসী স্থির হইল। সে যেভাবে কথাগুলি বলিল, তাহাতে তাহার কথা অবিশ্বাস করিতে পারিলাম না। তাহার কথাবার্ত্তায় তাহাকে বিদ্বান ও মহাশয় ব্যক্তি বলিয়া বোধ হইল এবং এতক্ষণ যে তাহার প্রতি উপযুক্ত সম্মান প্রদর্শন করা হয় নাই, তজ্জন্য অনুতপ্ত হইলাম। আমি তখন অতি বিনীতভাবে বলিলাম,—“শোভন সিং আপনাকেই তাঁহার কন্যার হত্যা কারী বলিয়া সন্দেহ করিয়াছে এবং তাঁহারই কথামত আমি আপনাদিগকে গ্রেপ্তার করিতে বাধ্য হইয়াছি। এখন আপনার মুখে যে সকল কথা শুনিলাম, তাহাতে আমার অবিশ্বাস নাই। কিন্তু তাহা হইলেও আমি এখন আপনাকে মুক্তি দিতে পারিব না। যতদিন না আপনার বিচার হয়, ততদিন এরূপে থাকিতে হইবে। শোভন সিংয়ের ভাগীনেয়ী আপনাকে দেখিয়াছিল। আমি এখনই তাহাকে এখানে ডাকিয়া আনাইতেছি। যদি সে সনাক্ত করে, তাহা হইলে বিচারে কি হয় বলা যায় না।”

 সন্ন্যাসী ভজন সিং ঈষৎ হাসিয়া বলিল,—“মৃত্যুর জন্য ভয় করি না—যদি অদৃষ্টে থাকে তবে আমার এই অপধাত মৃত্যুও কেহ রোধ করিতে পারিবে না। কিন্ত দেখিতেছি, আপনি ব্রাহ্মণ