পাতা:খুন না চুরি? - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
খুন না চুরি?
৪৩

 কামিনী আমার মুখের দিকে চাহিয়া কি বলিতে চেষ্টা করিল, কিন্তু পারিল না। আমারও তাহা শুনিবার ইচ্ছা ছিল না। আমি বলিলাম, কামিনীকে এখনই আমার সহিত থানায় যাইতে হইবে।

 আমার কথায় কামিনীর ভয় হইল। সে রোদন করিতে লাগিল। আমি মিষ্ট কথায় কামিনীকে সান্ত্বনা করিয়া বলিলাম, “তোমার কোন ভয় নাই। যদি দোষ না থাকে, এখনই মুক্তি পাইবে।”

 কামিনী আমার শ্লেষ বাক্য বুঝতে পারিল না। আমার কথায় বিশ্বাস করিয়া লালসিং কর্ত্তৃক আনীত এ্রকখানি ভাড়াটীয়া গাড়ীতে আমরা সকলেই আরোহণ করিলাম। আড্ডার সকল লোককে পুরষ্কার দিয়া সন্তুষ্ট করত কোচমানকে আমাদের থানা যাইতে আদেশ করিলাম।

 থানায় আসিয়া কামিনী ভজনসিংকে সনাক্ত করিল। সে বলিল, তাঁহারই পরামর্শ মত সে দুই জন বালিকাকে ভুলাইয়া তাঁহার নিকট লইয়া যায়; এবং এই কার্য্যের জন্য সন্ন্যাসী তাহাকে দশটা টাকা দিয়াছেন।

 সৌভাগ্যক্রমে সন্ন্যাসীত্রয় তখন ধ্যানে নিমগ্ন—কেহই কামিনীর কথা শুনিতে বা বুঝিতে পারিলেন না।

 বালিকাদ্বয়কে ভুলাইয়া লইয়া যাইবার জন্য কামিনীকে গ্রেপ্তার করা হইল। যতদিন না বিচার শেষ হয়, ততদিন তাহাকে হাজতে রাখিবার বাবস্থা হইল। কামিনী অনেক কান্নাকাটি করিল, অনেক কাকুতি মিনতি করিল, অনেক গালি বর্ষণ করিল কিন্ত কিছুতেই কিছু হইল না।